অবরোধের প্রভাব পড়েছে কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পে, দূরপাল্লার বাস বন্ধ
কক্সবাজার: বিএনপি-জামাতের ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধের প্রভাবে কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। কক্সবাজার শহরের হোটেল মোটেলের প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষই এখন খালি।
অবরোধ চলাকালে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও গতকাল যথারীতি কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় ২২টি ফ্লাইট আসা-যাওয়া করেছে। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথেও দুইটি পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করেছে।অবরোধের প্রথমদিন সড়ক-মহাসড়কের কোথাও পিকেটিং বা মিছিল দেখা যায়নি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনারও খবর পাওয়া যায়নি।
সরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমার কার্যক্রমও যথারীতি খোলা ছিল। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে মাইক্রোবাস ও সিএনজি ট্যাক্সিসহ অন্যান্য ছোট যানবাহনগুলো উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিনা বাধায় চলাচল করেছে।
সী-ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথেও চলাচলকারী তিনটি জাহাজের মধ্যে গতকাল দুইটি চলাচল করেছে এবং সেগুলোতে প্রায় ৭০০ পর্যটক সেন্টমার্টিন আসা-যাওয়া করেছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মর্তুজা জানান, মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ঢাকা থেকে ২২টি ফ্লাইট আসা-যাওয়া করেছে। এসব ফ্লাইটে প্রতিদিন দেড় হাজার থেকে ২ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন।
তবে অবরোধের প্রভাবে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে জানান জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা জাসদ সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল।
তিনি বলেন, অবরোধ ডাকার কারণে সোমবার (৩০ অক্টোবর) ৯০ শতাংশ পর্যটক কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন। দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যটন শিল্পে ব্যাপক বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সাগরপাড়ের রেস্তোরাঁগুলো এখন লোকসান গুণছে। অবরোধ চলাকালে পুলিশ প্রহরায় যাতে বাস চলাচল করা যায় সে লক্ষ্যে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
কক্সবাজার ট্যুরিজম সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, অবরোধের কারণে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার হোটেল-মোটেল জোনের হোটেলগুলোতে প্রায় ৯৫ শতাংশ কক্ষই ছিল খালি। তার নিজের মালিকানাধীন হোটেল ডায়মন্ডে মাত্র তিনটি কক্ষে পর্যটক ছিল বলে জানান তিনি।
কলাতলী সাগরপাড়ের তিন তারকা হোটেল সী-ক্রাউনের মহাব্যবস্থাপক ইকবাল মহসিন জানান, মঙ্গলবার তাদের হোটেলের মাত্র ১২ শতাংশ বা ১০টি কক্ষ ভাড়া হয়েছে।
হোটেল মালিকরা জানান, কক্সবাজারে ৫ শতাধিক হোটেল ও এক হাজারের বেশি রেস্তোরাঁ আছে। হোটেলগুলোতে একদিনে প্রায় দেড় লাখ মানুষ রাত যাপন করতে পারেন।