চট্টগ্রাম

অস্ত্র দিয়ে অটোরিকশা চালককে ফাঁসানোর অভিযোগ

সাতকানিয়া উপজেলায় চরতির ইউপি সদস্য সাইফুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র দিয়ে মোহাম্মদ আতিক নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ওই চালককে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর আগে বেধড়ক মারধর করে মুমূর্ষু অবস্থায় ভাঙা বন্দুক দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

ভুক্তভোগী আতিক বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে চরতি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড গাইনার বাড়ি এলাকায় আবু ছালেক নামে এক ব্যক্তি বেড়াতে আসেন। এসময় সিএনজিচালিত অটোরিকশারয় ১০ টাকার ভাড়া নিয়ে গাড়িচালকের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে গাড়িচালক জিহানের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। জিহান বিষয়টি চরতির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাইফুলকে জানায়। সঙ্গে সঙ্গে সাইফুল তার অস্ত্রে সজ্জিত বাহিনী নিয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গাইনা বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর চালানো হয় এবং স্থানীয়দের মারধর করতে থাকে।

পরবর্তীতে স্থানীয়রা সাইফুল বাহিনীকে প্রতিহত করতে চেষ্টা করে। কিন্তু অস্ত্রে সজ্জিত সাইফুল বাহিনীর হামলায় স্থানীয় অন্তত ২০ জন আহত হয়।

ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় মো. জাহাঙ্গীর বলেন, সাইফুল মেম্বারের নেতৃত্ব ১০ টাকার গাড়িভাড়া নিয়ে হামলা করা হয়। হামলায় ঘটনায় ভাঙা অস্ত্র দিয়ে আতিককে ফাঁসানো হয়েছে। আতিক ভাঙা অস্ত্র দিয়ে কেন নদীতে যাবে? নদীতে কি অস্ত্র দিয়ে সাঁতার কাটানো যায়। অস্ত্রটা সাইফুল মেম্বার দিয়েছেন, সাইফুল মেম্বারের একাধিক অস্ত্র রয়েছে। এলাকায় কোন ঘটনা ঘটলে সাইফুল মেম্বার অস্ত্র নিয়ে বের হয়ে যায়।

ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় মো. রুবেল বলেন, সাইফুল মেম্বার এলাকার মানুষ জনকে ভয় দেখানোর জন্য অস্ত্র দিয়ে আতিককে ফাঁসানো হয়েছে। আতিক সিএনজি অটোরিকশা চালক হয়ে অস্ত্র কোথায় পাবে? সাইফুল মেম্বার চরতির একাধিক মানুষকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে ছিলেন।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, মারধর করে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো সাইফুল মেম্বারের পুরনো অভ্যাস। এর আগে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে মিজবাহ নামের দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছিল সাইফুল। এছাড়া আশরাফ নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে একই কায়দায় পুলিশে সোপর্দের অভিযোগ রয়েছে সাইফুলের বিরুদ্ধে।

অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ অস্বীকার করে চরতি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাইফুল বলেন, ঘটনার দিন আমি সরাসরি যায়নি। প্রথমে গ্রাম পুলিশকে পাঠানো হয়েছে। পরে থানা পুলিশকে জানিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছিলাম। সেখানে গুলাগুলি করে পালিয়ে যাওয়া সময় আতিককে নদী থেকে অস্ত্র দিয়ে আটক করেছিলাম।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার বলেন, গুলি করে পালানোর সময় জনগণ আতিককে অস্ত্রসহ আটক করেছে। গুলাগুলির ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত একাধিক জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d