আজ ক্ষমা করার দিন
কেউ ধোঁকা দিল অথবা ক্ষতি করল আপনার? অথবা আপনার মনে হচ্ছে মানুষটি আপনাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করছে।ব্যক্তিভেদে প্রতিক্রিয়া ভিন্ন হবে; এটাই স্বাভাবিক। অধিকাংশ মানুষই হয়তো প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠবেন।
আর যারা একটু অন্য রকম, মানবিক, ক্ষমাশীল হৃদয়ের মানুষ, তারা কিন্তু সে পথ মাড়াবেন না। তারা দুঃখ পাবেন, আড়ালে মুখ লুকিয়ে বিষাদ লুকাবেন হয়তো। মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে ছোট্ট করে হাসি ফুটিয়ে তুলবেন মুখে। তারপর মনে মনে বলবেন, ‘ব্যাপার না, ক্ষমা করে দিলাম।’ ক্ষমা করে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অদ্ভুত এক স্বর্গীয় সুখে তার মন ভরে উঠবে।
মার্কিন মনোবিজ্ঞানী এভারেট অর্থিংটন সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, অন্যকে ক্ষমা করলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ৫টি দেশের ৪ হাজার ৫০০ জনের ওপর এই গবেষণা পরিচালিত হয়। অনেক গবেষণাপত্রেই এমন ফলাফল উঠে এসেছে। ক্ষমার মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে গড়ে ওঠে সুস্থ ও সুন্দর সম্পর্ক। হতাশা, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমে যায়। শত্রুতা হ্রাস পায়।
গবেষকেরা জানান, ক্ষমার সঙ্গে মানুষের দৈহিক সুস্থতাও অনেকাংশে সম্পর্কিত। ক্ষমা করার গুণ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, হৃৎস্বাস্থ্য ভালো রাখে, এমনকি দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মোদ্দাকথা, বিদ্বেষ, রাগ বা প্রতিশোধপরায়ণতার মতো নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো ক্ষমার মতো মহৎ গুণ দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে পারলে অপার সুখে ভরে ওঠে মানবজীবন।
আজ ৭ অক্টোবর, ক্ষমা করে সুখী হওয়ার দিন (ফরগিভনেস অ্যান্ড হ্যাপিনেস ডে)। যুক্তরাষ্ট্রে এটি পালিত হয়। রবার্ট ময়ার্স নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওয়ার্ল্ডওয়াইড ফরগিভনেস অ্যালায়েন্স দিনটি চালু করে। যারা ভুল বা অন্যায় করেছেন আপনার সঙ্গে, ক্ষতি করেছেন, আপনাকে অপমান–অপদস্থ করার চেষ্টা করেছেন, তাদের ক্ষমা করে দিন। দেখবেন ঘৃণা, অভিযোগ, দোষারোপ, অভিশাপ, প্রতিশোধের মানসিকতামুক্ত জীবন কতটা সুখের। ক্ষমা হলো বলবানের লক্ষণ। ক্ষমা নিয়ে মহাত্মা গান্ধী এমনই উক্তি করেছেন।