কৃষকের ছেলে তানভীরের ফ্রিল্যান্সিংয়ে আয় মাসে ৫ লাখ টাকা
তানভীর সুরুজ পড়াশোনা করছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে। বিষয় ইনোভেশন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ। তবে এরই মধ্যে পেশাগত সাফল্য পেয়েছেন। মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সফলতার পর তানভীর সুরুজ এখন উদ্যোক্তা। পড়াশোনার পাশাপাশি মাসে আয় করেন পাঁচ লাখ টাকা।
মেহেরপুরের গাংনীতে বাড়ি তানভীরের। বাবা মুনসুর আলী কৃষক, নিজের জমিতে চাষাবাদ করেন। মা নুরুন নাহার গৃহিণী। দুই-ভাই বোনের ছোট তানভীর। বোন বিউটি খাতুন মেহেরপুরের একটা প্রতিবন্ধী স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
২০০৩ সালের ২৮ অক্টোবর জন্ম তানভীরের। ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটার ও গেমসের প্রতি ভালো লাগা ছিল তানভীরের। সেই ভালো লাগা থেকেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু তার। এখন অনলাইনে নিজের কোম্পানি খুলেছেন এবং ন্যূনতম মাসিক আয় পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার। টাকার হিসাবে যা পাঁচ লাখের বেশি।
একসময় তানভীরের সময়ই কাটত মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারে গেমস খেলে। ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে তানভীর পরিচিত হলেন গ্রাফিক ডিজাইন ও ডিজিটাল বিপণন বিষয়ের সঙ্গে। এরপর তানভীর এসব বিষয়ে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর কথা ভাবেন। সেই সময়ে সপ্তম শ্রেণিপড়ুয়া ছেলেটি তথ্যপ্রযুক্তির নানা বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলেন।
দেশের অনেক উদ্যমী তরুণের মতো তানভীরও ঝুঁকে পড়লেন ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে। শুরুতে বড় সমস্যা ছিল বাবা-মাকে বোঝানো যে ফ্রিল্যান্সিং আসলে কী। কারণ, তারা ভাবতেন এতে পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া মেন্টর না থাকাটাও ছিল একটি বড় সমস্যা।
২০১৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজের শুরু তানভীরের। তবে প্রথম আয় করেন ২০২০ সালে। এভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে নিজের একটি অবস্থান তৈরি করে নেন তানভীর। পাশাপাশি পড়াশোনাও চলতে থাকে। ২০২৩ সালে সাহস করে যুক্তরাষ্ট্রের ঠিকানায় নিবন্ধন করে একটি অনলাইন কোম্পানি গড়ে তোলেন তানভীর। নাম ইকমক্যারি এলএলসি। কোনো কোনো মাসে ইকমক্যারি থেকে তাঁর আয় ১৫ লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যায়। তাঁর প্রতিষ্ঠান মূলত বিদেশি গ্রাহকদের জন্য পণ্য গবেষণা, অনলাইন দোকান চালু করে দেওয়া, ই-কমার্স বিপণনসহ নানা সেবা দিয়ে থাকে। আবার অ্যামাজন, ওয়ালমার্টসহ বিভিন্ন বড় ই–কমার্স সাইটে পণ্যও বিপণন করে এই ইকমক্যারি এলএলসি।