খাগড়াছড়ির জনজীবনে ফিরেছে স্বস্তি
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্ত রয়েছে। পাহাড়ি দুই জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনায় উদ্ভুত পরিস্থিতির পর বর্তমানে পরিস্থিতি চেনা ছন্দে ফিরছে।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে আহুত টানা ৭২ ঘণ্টার সড়ক অবরোধ শেষে জনজীবনে ফিরেছে স্বস্তি।
দূরপাল্লা ও আভ্যন্তরীণ সব সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। বাজারসহ সর্বত্র মানুষের উপস্থিতি গত কয়েকদিনের তুলনায় বেড়েছে। সহিংসতার কারণে জনজীবনে যে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছিল, সেটি অনেকটাই কেটে গেছে।
ঘটনার পর থেকে স্কুল-কলেজগুলো কার্যত বন্ধ থাকলেও আজ অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা এসেছে। তবে উপস্থিতি কিছুটা কম।
এদিকে ৭২ ঘণ্টার সড়ক অবরোধের কারণে সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকরা আজ খাগড়াছড়ি ফিরেছেন। সেনাবাহিনীসহ আইন শৃংখলাবাহিনীর সহায়তায় তারা সকাল ১০টার পর থেকে বিভিন্ন যানবাহনে করে খাগড়াছড়ি সদরে পৌঁছান তারা। পর্যটকরা এখন দূরপাল্লার বাসে করে খাগড়াছড়ি ছেড়ে যাচ্ছেন। গত তিনদিন ধরে সেখানে সহস্রাধিক পর্যটক আটকে ছিলেন।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে খাগড়াছড়ি জেলার পানখাইয়া পাড়ায় মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে মো. মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পেটানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মামুন মধ্য শালবাগান এলাকার মৃত নূর নবীর ছেলে।
এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জেলার দিঘীনালা উপজেলার লারমা স্কোয়ার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরে বিকেলে লারমা স্কয়ারের বাজারে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। তাতে ১০০টির বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যায়। আহত হন পাঁচজন।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের নারানখাইয়া স্বনির্ভর এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়। রাতের সহিংসতায় রুবেল (৩০), জুনান চাকমা (২০) ও ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) নামে তিনজন নিহত হন।
এ ঘটনার উত্তাপ পরদিন রাঙামাটি শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে জেলা শহরে শত শত পাহাড়ি জনতা মিছিল বের করে। সেই মিছিল থেকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বনরূপা এলাকার দোকানপাট ও স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয়। পরে দুপুরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
মামুন হত্যার ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা করেন তার স্ত্রী মুক্তা আক্তার।