চট্টগ্রামেও গুরুত্ব বেড়েছে কিংস পার্টির
চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গী ছিল তৃণমূল ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট। মুক্তিজোটের প্রার্থী ছিলেন সিলেটের রশিদ মিয়া।
চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল এনপিপি, ইসলামী ফ্রন্ট ও ইসলামিক ফ্রন্ট। দুটি নির্বাচনেই ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে ছিল। সেই কিংস পার্টি খ্যাত ছোট দলগুলো আলোচনায় আসে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও ছোট দলগুলো বড় ভূমিকা রাখছে।
গত ৩০ নভেম্বর ছিল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন। চট্টগ্রামের ১৬ আসনে ১৪৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে আওয়ামী লীগ মনোনীত দলীয় প্রার্থী ছাড়াও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য দুয়ার খোলা রেখেছে। ১৬ আসনের মধ্যে চারটি আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী রয়েছে। আর ১২টি আসনে ২২ জন হেভিওয়েট বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে আওয়ামী লীগ ছাড়াও অংশ নিচ্ছে অন্তত ২০টি দল। সবকটি আসনে প্রার্থী রয়েছে এসব দলগুলো। বিএনপিবিহীন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে বড় ভূমিকা রাখছে কিংস পার্টি খ্যাত এই দলগুলো। এরমধ্যে ছোট দলের অনেক বড় নেতাও বিভিন্ন আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির প্রেসিডেন্ট (বিএনএফ) এসএম আবুল কালাম আজাদ। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে এ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১১৮৫ ভোট পেয়েছিলেন তিনি। দশম জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি ছেড়ে বিএনএফ গঠন করে আলোচনায় আসেন তিনি। একই সঙ্গে ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম-৫ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম। গত নির্বাচনে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি জোট ছেড়ে নির্বাচনে লড়ছে তার দল। এছাড়াও ফটিকছড়ি আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ জোটের শরিক তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর দল ভোটে রয়েছে। আরেক ভাণ্ডারী সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি নামে নতুন দল গঠন করে আলোচনায় আসেন। চাচা-ভাতিজা এবারও ফটিকছড়ি আসন থেকে ভোটে লড়ছেন। এবং তাদের দল জেলার বেশির ভাগ আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
সৈয়দ নজিবুল বশর ও সাইফুদ্দিন আহমেদ মনোনয়নপত্র দাখিলের পর ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষায় তাদের দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে বলেও জানান তারা।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসনে প্রার্থী রয়েছে বিএনএফ, মুসলীম লীগ (বিএমএল), সুপ্রিম পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, তরিকত ফেডারেশন, জাসদ, জাকের পার্টি, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, এনপিপি, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, কল্যাণ পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী লীগসহ (ন্যাপ) আরও কয়েকটি দলের।
তবে চট্টগ্রামভিত্তিক একাধিক ইসলামী দলও এবার নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখছে। ১৬ আসনেই প্রার্থী দিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ। প্রতিটি আসনেই এ দুই দলের প্রার্থী রয়েছে। ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। তা রক্ষায় নির্বাচনে যাচ্ছে ইসলামী ফ্রন্ট।’