চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে সৎ বাবার যাবজ্জীবন

নগরের সরঘাট থানার মোগলটুলী কাটা বটগাছ মোড় এলাকায় ১৬ বছরের সৎ মেয়েকে পাশবিক নির্যাতনের দায়ে মো. মজিদ (৪৯) নামে এক সৎ বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২২ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এই রায় দেন।

মজিদ কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার গুলপাশা ইউনিয়নের সাবুক পাড়া আরচ মিয়ার বাড়ির মৃত আরজু মিয়া প্রকাশ আরচ মিয়ার ছেলে।
ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি এমএ নাসের বাংলানিউজকে বলেন, তিন সাক্ষীর সাক্ষ্য সৎ মেয়েকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি মো. মজিদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

রায়ের সময় আসামি ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। সাজা পরোয়ানামূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, নগরের সদরঘাট থানার মোগলটুলী কাটা বটগাছ মোড় এলাকার একটি বাসায় ১৬ বছর বয়সী মেয়ে মায়ের সঙ্গে সৎ বাবাসহ থাকত। মা বাসা-বাড়িতে বুয়ার কাজ করেন। সৎ বাবা পেশায় একজন গাড়িচালক। সৎ বাবা মেয়েকে অশালীন কথাবার্তাসহ খারাপ প্রস্তাব দিত। সৎ বাবাকে এই ধরনের খারাপ প্রস্তাবসহ অশালীন কথাবার্তা না বলার জন্য নিষেধ করলেও বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। ২০১৭ সালের ৯ ডিসেম্বর সকালে প্রতিদিনের মতো মা বাসা-বাড়িতে বুয়ার কাজ করতে গেলে সৎ বাবা মেয়েকে পাশবিক নির্যাতন করে। এ বিষয়ে মুখ খুললে কিশোরী ও মাকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়। এইভাবে সৎ বাবা সুযোগ পেলে পাশবিক নির্যাতন চালাত।

দুই-এক মাস পর কিশোরীর শারীরিক অবস্থার দিন দিন অবনতি হলে মা কারণ জানতে চান? সৎ বাবার হুমকির কথা মনে করে কিশোরী মাকে কিছুই বলার সাহস পায়নি। ২০১৮ সালের ১ জুন কিশোরী হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হলে কিশোরীকে মোগলটুলী বাজারে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান মা। সেখানে চিকিৎসক জানিয়েছেন কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা। কিশোরীর মা সৎ বাবাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে উত্তেজিত হয়ে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে থাকে।

এ ঘটনায় কিশোরী বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২ জুন সদরঘাট থানায় মামলা করে। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d