চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি দুটোই বেড়েছে
দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে গতি ফিরছে। এক মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৩৩ শতাংশ। একইসাথে আমদানিও বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। আমদানি রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে দীর্ঘদিন ধরে বেশ স্থবিরতা বিরাজ করছে। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ, ডলার ক্রাইসিসে দেখা দেয়া বৈশ্বিক সংকটসহ নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতায় দেশে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি কমে গিয়েছিল। দেশের অন্তত ৯২ শতাংশ আমদানি রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিংকারী চট্টগ্রাম বন্দরে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছিল। শুধু বন্দরেই নয়, রপ্তানি কমে যাওয়ার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও। রপ্তানি কমলে বিদেশ থেকে অর্থ আসার পরিমাণও কমে যায়। যা ক্রমাগত আঘাত করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। গত বেশে কিছুদিন যাবৎ চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের অর্থনীতিতে যার প্রভাব সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গত মে মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ বেশ ঘুরে দাঁড়ায়। এপ্রিল মাসের তুলনায় পণ্য রপ্তানি
৩২ দশমিক ৩৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। গত মে মাসে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে বিদেশে পণ্য রপ্তানি হয় ৬৪ হাজার ৫২৩ কন্টেনার। আগের মাসে যার পরিমাণ ছিল ৪৮ হাজার ৭৩৭ কন্টেনার। একমাসের ব্যবধানে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১৫ হাজার ৭৮৬ কন্টেনার। দেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির ফলেই রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মন্তব্য করেছে।
রপ্তানি বাড়ার সাথে সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে পণ্য আমদানিও বেড়েছে। একমাসের ব্যবধানে আমদানি বেড়েছে ১৩ হাজার ১৮২ কন্টেনার। একটি আমদানি নির্ভর দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে। এতে প্রচুর অর্থও বিদেশে চলে যায়। ডলার সংকটসহ নানা কারণে আমদানি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। গত মাসে যা আগের মাসের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত মে মাসে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার ৪০০ টিইইউএস কন্টেনার পণ্য আমদানি করা হয়। এর আগের মাসে যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৭ হাজার ২১৮ টিইইইউএস।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, এক মাসের ব্যবধানে ১৫ হাজার ৭৮৬ টিইইউএস কন্টেনার বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য কয়েক হাজার কোটি টাকা। রপ্তানি প্রবৃদ্ধির এই ধারা ধরে রাখার উপর গুরুত্বারোপ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, এটি দেশের জন্য অবশ্যই কল্যাণকর। এই ধারা ধরে রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে।
বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম গার্মেন্টস সেক্টরের পণ্য রপ্তানি বাড়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বৈশ্বিক অবস্থা কিছুটা ঘুরতে শুরু করেছে। আমাদের অর্ডার আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে, বেড়েছে রপ্তানি। অনেকদিনের জমে থাকা কিছু অর্ডারও আমরা পাচ্ছি। সবকিছু মিলে পরিস্থিতিকে তিনি মন্দের ভালো বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের সেক্টরে বেশ কিছু সংকট আছে। এসব ঘুচিয়ে রপ্তানি বৃদ্ধির ধারা ধরে রাখলে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে সুফল আসবে। তিনি আসন্ন বাজেটকে ব্যবসা বান্ধব করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার যদি আমাদের সাপোর্ট দেয়, তাহলে রপ্তানি বাড়ানোর প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হবে।