জরুরি ভর্তির পরামর্শ চিকিৎসকের, ‘ভুল’ রিপোর্টে হয়রানি
চার বছরের শিশু হুযাইব ৪ দিন ধরে ভুগছিল জ্বরে। ডাক্তারের কথায় সিবিসি ও ডেঙ্গু টেস্ট করানো হয় শিশু হুযাইবকে। রিপোর্ট দেখে পুরো হতভম্ব ডাক্তার, স্বজনদের বললেন, জরুরি ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে, নয়তো বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যেকোন মুহূর্তে! কথা শুনে হুয়াইবের বাবার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো।
এমন পরিস্থিতি শুধু একটি ভুল রিপোর্ট ঘিরে। রিপোর্টটি দেওয়া হয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া মা ও শিশু হাসপাতাল থেকে।
শিশু হুযাইব মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা গ্রামের আক্তার হোছাইনের ছেলে।
আক্তার হোছাইন জানান, ৪ বছর বয়সী সন্তান হুযাইব কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। শারীরিক অবনতি হলে গত ৬ অক্টোবর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিশ্বজিৎ রায় (রাজিব) এর কাছে নিয়ে যাই। তিনি আমার সন্তান কে দেখে সিবিসি ও ডেঙ্গু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে বলেন। পরীক্ষাগুলো চকরিয়া মা ও শিশু হাসপাতালে করার জন্য রেফার করেন। ওনার কথায় ওই হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষাগুলো করানো হয়। সিবিসি রিপোর্টে প্লাটিলেট স্বাভাবিক যেখানে দেড় থেকে সাড়ে চার লাখ থাকার কথা সেখানে দেখায় মাত্র ৩৬ হাজার! রিপোর্ট দেখে ডাক্তার হতভম্ব হয়ে পড়ে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেন। নয়তো যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলেন। পরে একজনের পরামর্শে একই পরীক্ষা চকরিয়ার অন্য আরেকটি ল্যাবে করাই। চকরিয়া ল্যাব হাউজের পরীক্ষায় ছেলের প্লাটিলেট পাওয়া যায় ৩ লাখ ৩২ হাজার।
এ বিষয়ে মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের (এমডি) মো. জাকারিয়া বলেন, মেশিন অটো রিপোর্ট দিয়ে থাকে। এতে প্রিন্টিংয়ে ভুল হয়েছে। এখন করার কি আছে আর! হাসপাতালে নতুন ডিপ্লোমাধারী টেকনিশিয়ান হওয়ায় টাইপিং মিসটেক হয়েছে। কিন্তু ল্যাবে রিপোর্ট ঠিক আছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টা জানতে চাইলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
এ বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোভন দত্ত বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। সিবিসি পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।