দফায় দফায় চাঁদা, পিছিয়ে নেই পুলিশও
মালামালভর্তি গাড়ি এসে থামতেই পুলিশের ইশারা। দোকান বসাতে লাগবে হালকা ‘চা-নাশতার’ খরচ। তাই দোকানিকে আড়ালে ডেকে নিয়ে শুরু হয় দরকষাকষি। আকুতি-কাকুতিতেও গলেনি পুলিশকর্তার মন। শেষমেশ ‘পকেটে গুজে’ হাসিমুখে গাড়ি ছাড়েন ওই কর্মকর্তা।
শুধু পুলিশ নয়, ‘জেলা পরিষদের লোক’ পরিচয়ে যুবকরাও এসে নিয়ে যায় চাঁদা। পুলিশ এককালীন সর্বোচ্চ হাজার টাকা এবং টহলভ্যান দৈনিক ১শ’ টাকা করে নিলেও স্থানীয় ‘চাঁদাবাজরা’ নেয় দোকানভেদে দুই থেকে পাঁচ হাজার।
ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার ১১৫তম আয়োজন এবার। আয়োজন ঘিরে চাঁদাবাজি রুখতে নানা উদ্যোগের ‘আষাঢ়ে গল্প’ শোনালেও মেলা প্রাঙ্গনের বাস্তব চিত্র ছিল এমনই।
সোমবার (২২ এপ্রিল) দিনব্যাপী এসব চিত্র সংগ্রহ করেছেন সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক। মেলা ঘিরে কোতোয়ালী মোড়, সিনেমা প্যালেস, লালদিঘী ও আন্দরকিল্লাসহ আশপাশের এলাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে বসা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেও পাওয়া গেছে নানা তথ্য।
অথচ, গত রবিবার মেলা উপলক্ষে ব্যবসায়ীকে চাঁদা দিতে হবে না, কেউ চাঁদা চাইলে নেওয়া হবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা—আয়োজক কমিটির সাথে সভা করে আগেভাগে এমন ঘোষণাই দিয়েছিলেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের এই মেলা প্রাঙ্গণে আসা পর্যন্ত কয়েক দফায় চাঁদা দিতে হয় তাদের। পথিমধ্যে চাঁদা দিয়ে আসলেও চট্টগ্রাম পৌঁছে পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকটি সিন্ডিকেটকেও ‘ম্যানেজ’ করতে হয়। অনেকটা হয়রানি এবং নির্যাতনের ভয়ে বাধ্য হয়েই চাঁদা দিচ্ছেন তারা। প্রায়ই অমুক-তমুক ভাইয়ের নাম বলে এসে চাঁদা দাবি করায় কাউকে চিনতেও পারছেন না তারা।
তবে পুলিশ বলছে, চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে নেওয়া হবে ব্যবস্থা। আর চাঁদাবাজির সাথে কোনো পুলিশ সদস্য জড়িত আছেন—এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ছাড় দেওয়া হবে না তাদেরও।
গাড়ি এসে থামলেই দিতে হয় চাঁদা
সোমবার (২২ এপ্রিল)। দুপুর দেড়টা। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে দোকানের মালামালভর্তি একটি পিকআপকে ইশারা দিয়ে দাঁড় করিয়েছেন বকশিরবিট পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. মনিরুল। তার সাথে ছিলেন অলি উল্লাহ নামে আরও একজন পুলিশ সদস্য।
এরপর সেই গাড়ির কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা তা চালকের কাছে জানতে চান অলি উল্লাহ। এরই মধ্যে গাড়ি থেকে নেমে আসেন এক যুবক। তাকে নিয়ে এএসআই মনিরুলের কাছে যান অলি উল্লাহ।
এর কিছুক্ষণ পর হাতের মুঠোয় করে টাকা নিয়ে অলি উল্লাহ’র পকেটে গুজে দেন গাড়ি থেকে নামা ওই যুবক। এরপর তাড়াহুড়ো করে ডিসকভার চট্ট মেট্রো ল ১৩-৯৫৪৫ সিরিয়ালের একটি মোটরসাইকেলে চেপে খুব দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ওই দুই পুলিশ সদস্য।
টাকা লেনদেনের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জানতে চাইলে গাড়িতে থাকা ওই যুবক এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে জানতে বকশিরহাট পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. মনিরুলের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে প্রতিবেদক ‘ভুল লোককে দেখেছে’ দাবি করে ফোন কেটে দেন।
এর আধঘণ্টার মধ্যেই প্রতিবেদকের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফের ফোন করে ‘মিচুয়াল’ করার প্রস্তাব দিয়ে মনিরুল বলেন, ‘এই বিষয়টা কোনোভাবে প্যাকআপ করে নিয়েন। ঘটনা হচ্ছে যে নিচ্ছে… মনে করেন ফোর্স ছিলো… বুঝেন নাই? এখানে তো পলিটিক্যালও আছে, হাজার হাজার করছে। এটা কি আমি-আপনি ঠেকাতে পারবো? অহরহ হচ্ছে। এটা কারও অজানা না। আপনি অফিসে থাকেন আমি আসি। দেখেন না, কোনোভাবে কিছু করা যায় কিনা।’
একপর্যায়ে চা খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে প্রতিবেদকের সাক্ষাত চেয়ে বলেন, আমাদের ব্যাপারগুলো তো আপনি জানেন। আপনি যদি অফিসে আসতেন একসাথে বসে চা খেয়ে কথা বলতাম। যদি ফ্রি থাকেন আপনি বক্সিরহাট ফাঁড়িতে আসেন, দেখা করি। না হয় আপনার অফিস কোথায় বলেন আমি যাব। আমি র্যাব থেকে কয়েকদিন আগেই পোস্টিং নিয়েছি৷ এখনো ক্রাইম জগতটা ভালোভাবে বুঝি না।’
জানতে চাইলে বক্সিরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক বোরহান উদ্দিন সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘আমি আজকেই (সোমবার) যোগদান করেছি এই ফাঁড়িতে। এরপর আমি আমার অধীনের প্রত্যেককে সতর্ক করে বলেছি মেলা থেকে কেউ যেন কোনো প্রকার চাঁদা নিতে না পারে। এমনটা হওয়ার তো কথা নয়। যদি হয়ে থাকে তবে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘জেলা পরিষদের লোক’ বলেও চাঁদা দাবি
মেলায় আসা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জেলা পরিষদের লোক পরিচয়ে চাঁদা দাবি করছে স্থানীয় যুবকেরা— এমন অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন একেক সময় একেক গ্রুপ এসে টাকা দাবি করায় কাউকে চিনতেও পারছেন না তারা। দোকান বসাতে হলে টাকা দিতে হবে তাই বাধ্য হয়েই দিচ্ছেন তারা। কারো চাহিদা ১০০ টাকা, কারোবা ২০০, আবার কাউকে ৫০ টাকা দিয়েই বিদায় করা যায়।
জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে রাজশাহী থেকে আসা এক দোকানি বলেন, ‘হঠাৎ জেলা পরিষদের লোক পরিচয় দিয়ে চা-নাস্তার টাকা চায়। আমি বলেছি একটা সিগারেটও খাওয়াবো না। তারা আমার সাথে ধাক্কাধাক্কিও করেছে।’
কেরানীগঞ্জ থেকে আসা মো. মঈন বলেন, ‘জেলা পরিষদ মার্কেটের লোক পরিচয় দিয়ে আমাদের এখানে বসিয়ে দিয়েছে। আমার ভাই মূলত দোকানের মালিক তাই কত টাকা দিতে হয়েছে তা বলতে পারবো না। তবে টাকা দিয়েই আমরা বসেছি।’
চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘এরকম কেউ চাঁদা নিয়ে থাকলে যেন পুলিশকে বলে। আমরা এরকম কোনো ক্ষমতা কাউকে দেইনি এবং চাঁদা তুলতে বলিওনি। যাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে তারা যেন প্রশাসনকে অভিযোগ করে।’
কার ভাড়া কে নেয়?
লালদীঘি ময়দানে ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলা ঘিরে লালদীঘি থেকে কোতোয়ালী, আন্দরকিল্লা, টেরীবাজার, সিনেমা প্যালেসসহ আশপাশের বিশাল জায়গাজুড়ে মেলা বসে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে আসেন। মেলার চার থেকে পাঁচদিন আগেভাগে এসে কেউ রাস্তার ধারে, কেউ মূল সড়কে, কেউ দোকানের কিনারা ঘিরে অস্থায়ী দোকান নির্মাণ করেন। এসব দোকান ঘিরে ভাড়ার নামেও চলে কয়েক দফার চাঁদাবাজি। স্থানীয় দোকানি থেকে শুরু করে নানাজনের হাতে এই চাঁদাবাজির নাটাই।
চাঁদাবাজির প্রভাব পণ্যের ওপর
মূলত বলীখেলাকে ঘিরে আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় সড়কের অল্প অংশ এবং ফুটপাতে বিক্রি করতে দেওয়া হয় কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। মেলায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা ট্রাকে ট্রাকে পণ্য নিয়ে হাজির হন। মেলা থেকে নগরবাসী বছরের নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র কিনে রাখেন।
এর মধ্যে রয়েছে গৃহস্থালি ও রান্নাঘরের বাসন-কোসন, আসবাবপত্র, মাটির তৈজসপত্র, ঝাড়ু, দা, বঁটি, হাতপাখা, গাছের চারা, মাছ ধরার জাল, পাটি, রুটি বানানোর পিঁড়ি, চালুন, টেরাকোটার সামগ্রী, শিশুদের টেপা পুতুল থেকে শুরু করে বিভিন্ন খেলনা ও হস্তশিল্প।
ব্যাপক চাঁদাবাজির ফলে পণ্যের মূল্যের ওপর প্রভাব পরে—এমনটা জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। চাঁদাবাজির ফলে উৎপাদন মূল্য এবং যাতায়াত খরচের সাথে পণ্যমূল্যের অন্তত ২০ শতাংশ বাড়তি যোগ করতে হয় ব্যবসায়ীদের।
রাজশাহীর সারদা থেকে আসা কুটিরশিল্প সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মো. সোহেল সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিষয়ে প্রতিবারই মেলা কমিটির পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়। বলে, কেউ চাঁদা নিলে যেন পুলিশকে জানাই। এখন পুলিশই এসে যদি চাঁদা নেয় তাহলে আমরা কীভাবে কাকে জানাবো? কয়েকদিনের জন্য উৎসব করে আমরা কিছু পণ্য বিক্রি করতে আসি। কিন্তু স্থানীয় কয়েকটি সিন্ডিকেটকে চাঁদা দিতে দিতে আমরা উৎসবের আনন্দ হারিয়ে ফেলি। আপনারা যাই লিখেন এগুলোর প্রতিকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘একটা পণ্য যদি আমি ৫শ’ টাকায় বিক্রি করতে চাই তবে থাকা খরচ এবং চাঁদার টাকা মিলিয়ে সেই পণ্যের সাথে আরও অন্তত ২০ শতাংশ বাড়তি দাম যোগ করতে হয়। এখন ক্রেতারা সেটা বুঝে না। বলে মেলায় জিনিসের দাম বেশি। দাম তো এসবের কারণেই বাড়ে। এখানে আমাদের তো কিছুই করার নেই আসলে।’
পথে পথে চাঁদাবাজি
লালদিঘী মাহবুব উল আলম চৌধুরী সিটি করপোরেশন পাবলিক লাইব্রেরির বিপরীতেই ঝাড়ুর দোকান নিয়ে বসা এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘৪৮ বছর ধরে আমি এখানে দোকান নিয়ে বসি। প্রতিবছরই আসি। পথে পথে চাঁদাবাজির কারণে ঝাড়ুর জোড়া যেখানে আগে ২০০ টাকায় বিক্রি করতাম তা এখন ৩০০ টাকার নিচে বিক্রি করতে পারি না।’
তিনি বলেন, ‘দৈনিক ১শ’ টাকা করে টহল পুলিশ এসে নিয়ে যায়। এছাড়া মাল নিয়ে পিকআপ এসে থামলেই পুলিশ কোতোয়ালী মোড়ে আটকিয়ে টাকা নেয়। যে ইনকাম তা চাঁদাতেই চলে যাচ্ছে।’
ইসমাইল নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘গতকাল রাতে এসেছি। আজ সকালে নেতা পরিচয়ে এক গ্রুপ এসে দুই হাজার টাকা নিয়ে গেছে। আরও কত গ্রুপ আসবে আগামীকাল কে জানে।’
পেট্রোল পাম্পের জায়গা ভাড়া দিয়েও চাঁদাবাজি
লালদিঘী থেকে সিনেমা প্যালেস রোডে যেতেই আছে ‘সিরাজুল হক অ্যান্ড সন্স’ নামে একটি পেট্রোল পাম্প। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সেই পাম্পের জায়গাও টাকার বিনিময়ে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
শফিক নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে পেট্রোল পাম্পের ওই জায়গা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এখানে একজন মধ্যস্থতাকারী রয়েছে। যিনি পেট্রোল পাম্প কর্তৃপক্ষের সাথে যোগসাজশে জায়গা ভাড়া দেন। তবে তার নাম জানি না।’
এ বিষয়ে পেট্রোল পাম্পের ডিলার মো. ফজলুল হক জানান, পাম্পের জায়গা ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তার সাথে টাকাপয়সা সংক্রান্ত কোনো লেনদেনও কারো সাথে হয়নি। যেহেতু ঐতিহ্যগতভাবে মেলাটি প্রতিবছর হয়ে থাকে সেই উপলক্ষে দোকানিদের কয়েকদিনের জন্য কোনো প্রকার ভাড়া ব্যতীত বসার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
চাঁদাবাজির বিষয়ে পুলিশকে আগেই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে এবং এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলা কমিটির সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘চাঁদাবাজির প্রমাণ থেকে থাকলে আপনি সংবাদ প্রকাশ করেন। প্রশাসনকে আমরা চাঁদাবাজির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা আগেই জানিয়েছি। এরকম কেউ চাঁদা নিয়ে থাকলে পুলিশকে গ্রেপ্তার করার জন্য বলেছি আমরা।’
চাঁদাবাজির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) আশরাফুল করিম সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘পুলিশ চাঁদা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আপনার কাছে প্রমাণ থাকলে আমাদের কাছে পাঠান। জড়িত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া সামগ্রিকভাবে কে বা কারা চাঁদাবাজি করছে এ বিষয়ে আমাদের তথ্যপ্রমাণ দিলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেলায় ব্যবসা করতে আসা সবাই অতিথি। মেলা কমিটি নিজেরাও কোনো চাঁদাবাজির সাথে জড়িত হবে না বলেছে। যেহেতু বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার ১১৫তম আসর এটি, তাই চট্টগ্রামের জন্য এটি ব্র্যান্ডিং। এই আয়োজন যেন সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে হয় সেজন্য আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকে যা যা করার দরকার আমরা করবো।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলা আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হবে। এই আয়োজন ঘিরে ২৪, ২৫ ও ২৬ এপ্রিল মেলা চলবে। ২৩ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে বলীখেলায় অংশগ্রহণার্থীদের নিবন্ধন শুরু হয়।
ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালি যুব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করতে চট্টগ্রামের বদরপতি এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর কুস্তির প্রবর্তন করেছিলেন, যা চট্টগ্রাম অঞ্চলে ‘বলীখেলা’ নামে পরিচিত। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা সনের ১২ বৈশাখ নিজ নামে লালদিঘির মাঠে এই বলীখেলার সূচনা করেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর লালদিঘির মাঠে ১২ বৈশাখ অনুষ্ঠিত হয় বলীখেলা।