চট্টগ্রামবাঁশখালীশিক্ষা

দুইবার পরীক্ষা দিয়েও ফেল ৮১ শিক্ষার্থী, প্রধান শিক্ষকের ওপর চড়াও

একে একে দুইবার নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউ ৮ বিষয়ে অকৃতকার্য, আবার কেউ ১০ বিষয়ে। এভাবে ৮১ জন পরীক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করেছেন। দুইবার পরীক্ষা দিয়েও পাস করতে ব্যর্থ ৮১ জন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা উল্টো প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন। এমন অবাক করা ঘটনাটি বাঁশখালীর নাটমূড়া পুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের।

জানা যায়, গত ১ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত নাটমূড়া পুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী। এরমধ্যে কৃতকার্য হয় ২৩০ জন। আর অকৃতকার্য হয় ৮১ জন শিক্ষার্থী। ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য আবার নির্বাচনী পরীক্ষার আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুনরায় গত ৫ নভেম্বর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত সকাল-বিকাল দুটি পরীক্ষা নেয় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। কিন্তু তাতেও ফলাফল পরিবর্তন করতে পারেননি এসব শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ফরম পূরণের অনুমতি না দেওয়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন ৮১ জন শিক্ষার্থী।

রবিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এমনকি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ চেয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তারের কাছে স্মারকলিপি দেন ফেল করা শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিরিন, সাকিয়া, মাসুদ ও তারেকসহ কয়েকজন পরীক্ষার্থী বলেন, ‘স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ৮১ জন শিক্ষার্থী থেকে ৪ জনকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। দ্বিতীয়বার পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে একজন শিক্ষক এসে আমাদের এক সহপাঠীকে বলে, ‘এতো লিখে কী লাভ? ৪ জন এর বেশি কাউকে উত্তীর্ণ করবো না।’ পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি আমাদের প্রধান শিক্ষক আমাদের পরীক্ষার খাতাগুলো মূল্যায়ন না করে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে চুক্তি হওয়া ৪ জনের খাতা মূল্যায়ন এবং তাদের ফরম পূরণের অনুমতি দেয়।’

জুবায়ের, লিজা ও দিলরুবা নামের তিন পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের ৮১ জন সহপাঠীর মধ্যে ৮০ শতাংশ ছাত্রী। ফরম পূরণের অনুমতি না দেওয়ায় ইতোমধ্যে তাদের বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে তাদের পরিবার। আবার ছেলেদের মধ্যে অনেকে বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ও পরিবার এবং প্রতিবেশীদের খারাপ ব্যবহারের কারণে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d