চট্টগ্রাম

দু’পক্ষের সংঘর্ষের পর পোড়ানো হলো মাদ্রাসা

আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে সাতজন আহত হয়েছেন। এ সময় স্থানীয় একটি এতিমখানা ও মাদ্রাসা পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর সরেঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাগরে মাছ ধরার নৌকা নিয়ে উত্তর সরেঙ্গার আবদুল আজিজের সঙ্গে একই এলাকার আবদুস সালাম মাঝির বিরোধ চলে আসছে। তিন মাস আগে আজিজকে নৌকা থেকে নামিয়ে দেন সালাম মাঝি। টাকা-পয়সা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে আজিজের সঙ্গে সালাম মাঝির ভাতিজা আবুল বশরের দুই দফা তর্কাতর্কি হয়। এর জেরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সালাম মাঝির বাড়ির সামনে দু’পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের জাহাঙ্গীর আলম, আবু সালেক, আবুল কালাম, আয়শা খাতুন, আবুল বশর, মোহাম্মদ ইসহাক ও মোহাম্মদ এসকান্দর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মারামারির ঘটনার কিছুক্ষণ পরই ওই এলাকার জামেয়া তৈয়বিয়া দারুস সালাম সুন্নিয়া মাদ্রাসায় আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। বিবদমান দু’পক্ষই এ ঘটনায় একে অপরকে দায়ী করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নেভায়। তবে ততক্ষণে মাদ্রাসাটি পুড়ে যায়।

মাদ্রাসার পরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর জানান, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে রিদুয়ানুল হকের পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ। মঙ্গলবার রাতে রিদুয়ান ও তার আত্মীয় আজিজের নেতৃত্বে মাদ্রাসায় হামলা করা হয়। এতে নারীসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হন। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি রয়েছেন। আবদুল আজিজসহ তাদের লোকজনই মাদ্রাসাটি পুড়িয়ে দেয়।

তবে আবদুল আজিজ বিষয়টি অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, প্রতিপক্ষ ওবাইদুর ও এসকান্দরের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা হয়েছে। রাতে মারামারি করে নিজেরাই মাদ্রাসায় আগুন লাগিয়ে তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

গতকাল বুধবার সকালে মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দেখেন, সব পুড়ে গেছে। এ তথ্য জানিয়ে শিক্ষক শওকত হোসেন বলেন, আগুনে মাদ্রাসায় রক্ষিত পবিত্র কোরআন শরিফ ও শতাধিক শিক্ষার্থীর সামগ্রী পুড়ে গেছে। তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল।

চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) সোহানুর রহমান সোহাগ বলেন, বিষয়টি জেনেছেন। এ ঘটনায় কেউ মামলা বা অভিযোগ দেয়নি। পুলিশ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d