‘দেশকে পিছিয়ে দিতে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চায়’
দেশকে পিছিয়ে দিতে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য ও সুখবিলাশ ফিশারীজ ও প্ল্যান্টেশনের চেয়ারম্যান এরশাদ মাহমুদ।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া রাজারহাট চত্ত্বরে আয়োজিত ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১-৯ ওয়ার্ডের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এরশাদ মাহমুদ বলেন, ‘আমেরিকা নাকি আমাদের স্যাংশন দিবে। ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেবে। এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য আমাদের র্যাব বাহিনীর কর্তাব্যক্তিদের ওখানে যেতে দেবে না। আরও অনেক কিছু। তাহলে একটু পেছনে তাকাই, ১৯৭১ সালে যখন স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল, যখন গণহত্যা হয়েছিল তখন এ আমেরিকা কোথায় ছিল? তখন প্রতিবাদ করেনি কেন? যখন বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল, তখন আমেরিকা কোথায় ছিল। তখন মানবাধিকারের কথা উঠেনি কেনো? যখন জাতীয় চার নেতাকে জেলে বন্দী অবস্থায় খুন করা হয়েছিল তখন আমেরিকার মানবাধিকার কোথায় ছিল? আজকে ফিলিস্তিনের হাসপাতালে ৫‘শ নারী-শিশুকে বম্বিং করে ইসরায়েল মেরে ফেলেছে এখন আমেরিকার মানবাধিকার কোথায়? কাদের স্যাংশন দিচ্ছেন?’ সহস্র বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তাদেরকে সেই আমেরিকা আশ্রয় দিয়েছে। আমেরিকা সাহায্য করবে বা কী করবে, না করবে তা নিয়ে বসে থাকে এ দেশের একটি দল।
দেশকে পিছিয়ে দিতে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চায় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা ক্ষমতার জন্য আমেরিকার দ্বারস্থ হবেন, ইউরোপের দ্বারস্থ হবেন; কেউ কিছু দেবে না। সবাই স্বার্থ ছাড়া কিছু চেনে না। আপনারা ক্ষমতার জন্য দেশের বদনাম করবেন। এবং দেশের বিভিন্ন কিছুর জন্য স্যাংশনের আশা করবেন এবং স্যাংশন দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করবেন, দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাবেন। দেশকে পিছিয়ে নিয়ে গিয়ে আপনারা ক্ষমতায় যেতে চান। এবং আমাদের উন্নয়নের যাত্রাকে আপনারা স্তব্ধ করে দিতে চান, এটা কিন্তু ঠিক না। আপনারা যদি দেশদরদী হোন তাহলে দেশের মানুষের কথা চিন্তা করেন। তাহলে আপনারা এই পদলেহন করতে পারেন না। আপনারা পশ্চিমা বিশ্বের পদলেহন করতে পারেন না।’
পদুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক দক্ষতার প্রশংসা করে এরশাদ মাহমুদ বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগ মানে হলো স্বেচ্ছায় সেবা দান করা। আমি দেখেছি, পদুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ স্বেচ্ছায় সেবা দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সার্থকতা প্রমাণ করতে পেরেছে। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কিছু করে দেখিয়েছে। তারা বর্তমানে স্বেচ্ছায় সেবা দিয়ে যাচ্ছে।’
উক্ত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি ছিলেন উত্তর জেলা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন রিয়াজ, বিশেষ অতিথি ছিলেন পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু জাফর, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বাবু দুলাল কান্তি দাশ, সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বদি, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন, প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. দিদারুল আলম, পদুয়া ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান জাহিদ হাছান তালুকদার।
উত্তর জেলা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন রিয়াজ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত বিভিন্ন দেশে ধর্না দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হবে না। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন প্রিয়নেত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন। আজকে দেশে পদ্মাসেতু, বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়েসহ নানা মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। সবই হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বের কারণে। তাই এই অভূতপূর্ব উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে ও জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে প্রিয় নেতা মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে চতুর্থবারের মতো বিজয়ী করে সংসদে পাঠাতে হবে। এজন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভাইদের রাজপথে থাকতে হবে।’
পদুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন শওকতের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রনি আচার্য্যের সঞ্চালনায় সম্মেলনে উদ্বোধক ছিলেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. তারেক সোহেল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এস. এম. রোকন উদ্দীন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি অঞ্জন কান্তি দাশ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক টিটু কুমার বড়ুয়া, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি সেলিম উদ্দিন, ইউনিয়ন যু্বলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাসেল, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সায়েদ, ইউনিয়ন জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি সোহেল আজাদ, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক তারেক উদ্দিন রানা প্রমুখ।
সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে পদুয়া ১ নং ওয়ার্ডে মো. মুফিজুল ইসলামকে সভাপতি ও শওকত আকবরকে সাধারণ সম্পাদক, ২ নং ওয়ার্ডে মো. সোহেল ভান্ডারীকে সভাপতি ও বাবু প্রশান্ত বড়ুয়াকে সাধারণ সম্পাদক, ৩ নং ওয়ার্ডে মো. আবু ছৈয়দকে সভাপতি ও মো. নজরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক, ৫ নং ওয়ার্ডে মো. আরিফকে সভাপতি ও মো. শফিকুল ইসলাসকে সাধারণ সম্পাদক, ৬ নং ওয়ার্ডে মো. নুরুল ইসলাম রাজীবকে সভাপতি ও মো. আব্দুল ছালাম জব্বারকে সাধারণ সম্পাদক, ৭ নং ওয়ার্ডে মো. বেদার আলমকে সভাপতি ও মো. শফিউল আলমকে সাধারণ সম্পাদক, ৮নং ওয়ার্ডে মো. মনিরুজ্জামান মনিরকে সভাপতি ও মো. রুবেলকে সাধারণ সম্পাদক, ৯ নং ওয়ার্ডে আব্দুল গফফারকে সভাপতি ও মো. সাজ্জাদ আলীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।
এর আগে সম্মেলনের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মোহাম্মদ ইয়াছিন। এরপর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সবশেষে ৯টি ওয়ার্ড থেকে নব-নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে বরণ করে নেন সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।