জাতীয়

‘নিজ আয়েই প্রতিস্থাপন খরচ মেটাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ থেকে কোম্পানির যে আয় হচ্ছে তা দিয়েই স্যাটেলাইট প্রতিস্থাপনের খরচ মেটানো যাবে বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের ৬ষ্ঠ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) আয়োজিত অনুষ্ঠানে কক্সবাজার থেকে ভার্চুয়াল উপায়ে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ তথ্য দেন।

উল্লেখ্য, বর্তমান বিশ্বের স্যাটেলাইটগুলোর গড়পড়তা আয়ু ১৫ বছর। ফলে এ সময়ের মধ্যে এটি প্রতিস্থাপন করতে হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নির্মাণ ও উৎক্ষেপণে ব্যয় হয়েছে ২৭৬৫ কোটি টাকা। এটি ২০৩৪ সাল নাগাদ প্রতিস্থাপন করতে হবে। আর বিএসসিএল যে হারে আয় করছে তাতে এর মধ্যেই স্যাটেলাইট প্রতিস্থাপনের সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে।

এ সময় দেশের পরবর্তী স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২’ মহাকাশে উৎক্ষেপণের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ হবে আর্থ অবজারভেটরি বা পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী স্যাটেলাইট। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ভূ-প্রকৃতি, নদী ও সাগর নিয়ে গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত হবে এবং ব্লু ইকোনমির পরিপূর্ণ সুফল গ্রহণের পথে আমরা আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাব।

বিএসসিএল চেয়ারম্যান ও কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহ্‌জাহান মাহমুদের সভাপতিত্বে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, এসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (এটকো) এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকবাল সোবহান চৌধুরী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপণের ৬ষ্ঠ বর্ষপূর্তি উদ্যাপন অনুষ্ঠান উপযাপন করছি, সেটি জাতির পিতার কারণেই। তিনিই প্রথম ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের সঙ্গে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সূচনা করেন।’

‘পরবর্তীতে তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মহাকাশে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের লক্ষ্যস্থির করেন, যার ফলস্বরূপ বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে ২০১৮ সালের ১২ মে বাংলাদেশ সময় ভোর ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স এর রকেটে মহাকাশে পাঠানো হয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’, উল্লেখ করেন ড. হাছান।

ছয় বছরে স্যাটেলাইটের কারিগরি ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের সাফল্যকে প্রশংসনীয় বলে বর্ণনা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের সকল টিভি চ্যানেল, ২৬ টি বিদেশি চ্যানেল এবং দেশের একমাত্র ডিটিএইচ সেবা ‘আকাশ ডিটিএইচ’ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে সম্প্রচারিত হচ্ছে। প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকা বিশেষত পার্বত্য, উপকূলীয়, হাওড় এবং দ্বীপাঞ্চলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে

পূর্বতন দায়িত্বের সময়ের কথা উল্লেখ করে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী থাকা অবস্থায় একটি কার্যকর টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) সিস্টেম চালু করার জন্য আমি বিএসসিএল-কে দায়িত্ব প্রদান করি, তারা কার্যকরভাবে তা চালু করে, যা উদ্বোধনও করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।’

এ সম্পর্কে মন্ত্রী আরও জানান, এই টিআরপির মাধ্যমে বর্তমানে কোন গ্রাহকের কোন টেলিভিশনে কোন চ্যানেল দেখা হচ্ছে, কতক্ষণ ধরে দেখা হচ্ছে এ সব তথ্য গাণিতিক বিশ্লেষণ করে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জনপ্রিয়তার তথ্য সেবাগ্রহীতাদের প্রদান করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d