পাঠ্যপুস্তকে বিকৃত মতবাদ বাদ দিতে হবে: হেফাজত
নতুন কারিকুলামে যৌন শিক্ষাসহ এমন বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে যা বাংলাদেশের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জন্য একেবারেই অন্যায়। এমনটা মনে করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তিনি সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ৭ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে লিংগ বিকৃতি (ট্রান্সজেন্ডার) মতবাদ শিখিয়ে কি অর্জন করতে চায় দেশ?
তিনি বলেন, ‘এই মতবাদ পরিবার, মূল্যবোধ ও সমাজ বিধ্বংসী। যে মতবাদের বিরুদ্ধে শংকিত হয়ে পশ্চিমা বিশ্বের পিতামাতারা রাস্তায় নেমেছেন, সেখানে বাংলাদেশের মত সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই পরিবার বিধংসী মতবাদ শিখিয়ে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে সেই বিকৃত মতবাদকে পাঠাপুস্তক থেকে বাদ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
সোমবার বিকেলে হেফাজতে ইসলাম ফেনী জেলা নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভা ও কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির, প্রবীণ আলেম মাওলানা আফজালুর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মুফতি সাইফুদ্দিন কাসেমী।
আজিজুল হক ইসলামাবাদী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অথচ ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে সিলেবাস থেকে পর্যায়ক্রমে বাদ দেয়া হয়েছে ইসলামের ইতিহাস, মুসলিম সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ, উদ্দীপনামূলক কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ। এটা মুসলিম জনগোষ্ঠীর নতুন প্রজন্মকে সর্বনাশ করে ফেলবে। বর্তমান শিক্ষা কারিকুলামে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের নীল-নকশা করা হয়েছে ।’
লজ্জা-শরম-হায়া ঈমানের অঙ্গ। এটা শিক্ষা দেয়ার জন্য স্কুল-কলেজ-বিশ্ব বিদ্যালয়ে আলাদা বিভাগ জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এগুলোর অভাবে শিক্ষার্থীরা নৈতিক সভ্যতা হারিয়ে ফেলছে। ধীরে ধীরে নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে । আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহ তাআলা আদ-সামুদের মতো শক্তিশালী জাতিগোষ্ঠীকে অসভ্যতার সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার কারণেই নির্মূল করে দিয়েছেন।’
সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের ফেনী জেলা, ফেনী সদর উপজেলা ও ফেনী পৌরসভা কমিটি ঘোষণা করা হয়।
মাওলানা আফজালুর রহমানকে সভাপতি ও মাওলানা ওমর ফারুককে সাধারণ সম্পাদক করে ১৭০ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া জেলা কমিটিতে সহ সভাপতি হলেন, মাওলানা আবদুল হান্নান, মুফতি সাইফুদ্দীন কাসেমী ও মাওলানা মোমিনুল হক জাদীদ। সহ সেক্রেটারি করা হয়েছে, মাওলানা জাফর আহমদ চৌধুরী, মাওলানা মীর হোসাইন, কারী আবুল কাশেম, মাওলানা কাশেম নোমানী, মাওলানা আবুল খায়ের মাসুম, মাওলানা মো. আলী মিল্লাত ও মুফতি কামাল উদ্দিনকে। সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন মাওলানা জালালুদ্দীন ফারুক, অর্থ সম্পাদক মুফতি শাহ ইমরান ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ ওসমান গনী।
এছাড়া সম্মেলনে ১৩০ সদস্য বিশিষ্ট ফেনী সদর উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং ১২৪ সদস্য নিয়ে ফেনী পৌর কমিটি ঘোষণা করা হয়।