পাল্টে যাচ্ছে নগরের বিভিন্ন সড়ক ও অলি-গলির পুরনো নাম
চট্টগ্রাম: নগরের বিভিন্ন সড়ক ও অলি-গলির পুরনো নাম ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে। দলিল-দস্তাবেজ থেকে মুছে যাচ্ছে বিশিষ্টজনদের নাম। এছাড়া অনেক মনীষীর স্মৃতি রক্ষায় নেই উদ্যোগ। নগরের দক্ষিণ কাট্টলীর জমিদার প্রাণহরি দাশ জীবদ্দশায় ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ও ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডের জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে নিজ উদ্যোগে যে সড়কটি তৈরি করেন, সেটি প্রাণহরি দাশ সড়ক নামে পরিচিত।
এই সড়ক দক্ষিণ কাট্টলী সাগরপাড়ের বারুণী স্নানঘাট ও জেলেঘাট থেকে পাহাড়তলী বাজারকে সংযুক্ত করেছে। সম্প্রতি সড়কটির নাম পরিবর্তন করে ‘লোহারপুল মেইন রোড’ নামে নামকরণের প্রচেষ্টা চলছে। এই নামে স্থাপন করা হয়েছে উদ্বোধনী ফলকও।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, সড়ক উন্নয়নের নামে দক্ষিণ কাট্টলীর শত বছরের ঐতিহ্যবাহী প্রাণহরি দাশ সড়কের নাম পরিবর্তন করে এলাকাবাসীর অজান্তে লোহারপুল মেইন রোডের নামে উদ্বোধনী ফলক স্থাপন করা নিন্দনীয়। তিনি এই ফলক সরিয়ে নিতে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চসিক মেয়র ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে ২০১৯ সালে কাজীর দেউড়ি মোড়, আলমাস সিনেমা হলের মোড়, মেহেদীবাগ মোড়, জেমস ফিনলে, মেডিক্যাল হোস্টেলের সামনে ও চকবাজার মোড়ে থাকা চট্টেশ্বরী সড়কের ছয়টি নামফলক রাতের অন্ধকারে সরিয়ে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায়ও সরব হয়েছিলেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা। সংবাদ সম্মেলন করে তারা বলেন, ‘এই সড়কের নাম মুছে ফেলার কাজ গত চার দশক ধরে ধীরে ধীরে হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাস-ঐতিহ্যকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা বাংলাদেশে বহু এলাকার নাম পরিবর্তন করেছে। তখনো ৫০০ বছরের পুরনো চট্টেশ্বরী মন্দিরের নামে এ সড়কের নাম পরিবর্তন করেনি। জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে চট্টেশ্বরী সড়কের ওইসব মোড়ে পুনরায় নামফলক বসানোর দাবি বাস্তবায়ন হয়নি গত চার বছরেও।
একই সময়ে নগরীর ‘প্রবর্তক মোড়’ নাম পরিবর্তন করে আইয়ুব বাচ্চু চত্বর করার ঘোষণা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।