পুরুষদের বিরুদ্ধে বেশি কিছু বলে নিজের ভোট হারাতে চাই না
পুরুষদের বিরুদ্ধে বেশি কিছু বলে নিজের ভোট হারাতে চান না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ (শুক্রবার) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৪ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলনে।
এই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের যে বৃত্তি দেই সেই বৃত্তির টাকা সরাসরি মায়ের নামে চলে যায়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেই টাকা মায়ের নামে চলে যায়। মায়ের নামে দিলে টাকাটা থাকে, কাজে লাগে আর সেটা সাশ্রয় হয়। বাবার নামে দিলে সব সময় যে পাবে তা তো না। দেখা গেল জুয়া-টুয়া খেলে উড়িয়ে দিল বা দুটো বড় বড় ইলিশ মাছ নিয়ে এসে খেয়ে সাবাড় করে দিল। মা সবসময় সঞ্চয় করে। মায়ের সব সময় সঞ্চয়ের মনোভাব আছে।
মুখে হাসি নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি পুরুষদের বিরুদ্ধে কিছু বলছি না। বেশি কিছু বলে নিজের ভোট হারাতে চাই না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নারীদের জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, এমনকি বর্ডার গার্ড, কোথাও নারীদের অবস্থান ছিল না। আমরা সেখানে একে একে সব বাহিনীতে মেয়েদের সুযোগ করে দেই। মেরিন একাডেমিতে মেয়েদের পড়ারই সুযোগ ছিল না। সেটাও আমরা করে দিয়েছি। আজ দেশে-বিদেশে মেয়েরা কাজ করছে। আমাদের শান্তিরক্ষা মিশনে মেয়েরা সবচেয়ে ভালো কাজ করছে। জাতিসংঘ এখন মেয়ে অফিসার চায়। পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনীতে আমাদের মেয়েরা দক্ষতার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। একটা সুযোগ দিতে হয়, সুযোগ না দিলে হয় না।
তিনি বলেন, আমি দেখেছি আমার মাকে, আমার বাবা সেই ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলন থেকে সংগ্রাম শুরু করেন। যখন আমার বাবা কারাগারে থাকতেন, একদিকে সংসার, আমাদের মানুষ করার পাশাপাশি রাজনৈতিক দল করা, আন্দোলন সংগ্রামকে গড়ে তোলা, অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজগুলো করে গেছেন। তিনি যা করেছেন সবই পর্দার আড়ালে করেছেন। আমার মা বড় গেরিলা ছিলেন। গোয়েন্দা সংস্থাও কখনও ধরতে পারেনি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে বাবার নামে গোয়েন্দাদের রিপোর্টগুলো আমি পড়ে দেখেছি, আমার মা যে গোপনে আন্দোলনরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর সাথে দেখা করা, তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়া, আন্দোলন কীভাবে গড়ে তুলবে সেগুলো (দিকনির্দেশনা) দেওয়া… এই কাজগুলো যে করতেন… কখনও গোয়েন্দারা ধরতে পারেননি। এজন্য তাদের কাছে রিপোর্টও নেই। তবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা যখন দেয় তখন কয়েকবার আমার মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ধারণা ছিল তখন তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সেই সাহস পায়নি।