বেসরকারি মাধ্যমিকেও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেবে সরকার!
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি স্কুল বা মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে ২ অক্টোবর (সোমবার) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সেমিনারের আয়োজন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অনেকেই উপস্থিত থাকবেন।
নতুন এ উদ্যোগে প্রধান শিক্ষকের যোগ্যতার বিষয়ে শর্ত কী হবে, তা নিয়ে রয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া নীতিমালা অনুযায়ী, যোগ্যতা থাকার পরও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অনেক অদক্ষ শিক্ষকও প্রধান শিক্ষকের পদে সমাসীন হয়ে যান।
কয়েকটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের তথ্যানুযায়ী, স্থানীয় দলীয় নেতা, সংশ্লিষ্ট স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির কাছে তদবির করেই প্রধান শিক্ষকের পদে আসতে হয়। এক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা দেনদরবারে ভেঙে যায় আগ্রহী ভুক্তভোগীর স্বপ্ন। অনেক সময় লিখিত পরীক্ষা শুধু আইওয়াশের জন্য নেয়া হয়। মূলত যার তদবির আর টাকার জোর বেশি সে-ই আগে থেকে চূড়ান্ত হয়ে থাকেন।
সরকার যদি যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে চায়, তাহলে ২০২১ সালের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা থেকে কিছু প্রতিবন্ধকতা বা শর্ত শিথিল করতে হবে বলে মনে করেন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা। সহকারী শিক্ষকদের মতে, যোগ্যরা আবেদন করতে পারবেন এমন ব্যবস্থা করা হোক।
বর্তমানে ম্যানেজিং কমিটির নিয়োগ কমিটিতে সরকারি কলেজের একজন শিক্ষক রাখা হয়। কিন্তু তাদের মতে, যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ করে দিতে সহকারী শিক্ষকের ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা রাখা হোক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ৩ বছরের অভিজ্ঞতার শর্ত বাতিল করা হোক। পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগে সুবিচার করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক অফিস থেকে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে নিয়োগ ও কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দিতে হবে।
তবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীনে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা হলে দুর্নীতি বন্ধের পাশাপাশি যোগ্যরা প্রাধান্য পাবেন বলে মনে করেন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা।
পরিসংখ্যান বলছে, সারাদেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৩৫টি, বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০ হাজার ৩১৬টি, বেসরকারি মাদ্রাসা রয়েছে ৮ হাজার ২২৯টি।
এর আগে সবশেষ ২০২১ সালের ২৯ মার্চ বেসরকারি পর্যায়ে মাধ্যমিকে প্রধান শিক্ষকের যোগ্যতা নির্ধারণ করে সার্কুলার দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।