ভাত-ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের সতর্ক হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি চক্রান্ত করছে। কিন্তু আমাদের শক্তি জনগণ। বারবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে, শত বাধা অতিক্রম করে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যেন বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে। এদেশের মানুষের নির্বাচন কেউ বানচাল করতে পারবে না।’
শুক্রবার জাতীয় চারনেতার হত্যা দিবস স্মরণে আয়োজিত আলোচনাসভায় বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেণ, ‘ওরা নানাভাবে অপচেষ্টা করবে। আওয়ামী নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ভোটের অধিকার যেনো নিশ্চিত থাকে, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট যেন দিতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তারা যদি নির্বাচনে আসেও সেটা নমিনেশন বাণিজ্যের জন্য আসবে। মানুষের জানমাল যেনো ক্ষতি না করতে পারে সেই সুরক্ষা দিতে হবে। এটাই আওয়ামীলীগের দায়িত্ব।’
তিনি জাতীয় চারনেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘যে রক্ত দিয়ে লাখো শহীদ স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, নির্যাতিত মা বোন, জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড, চার নেতার হত্যা, হাজার হাজার নেতাকর্মী যারা সংগ্রাম করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন তাদের কথা স্মরণে রেখে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সংগ্রাম, অনেক রক্ত, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ২৫মার্চ গণহত্যা শুরু পরেরই স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। এর আগে ৭ মার্চ তিনি ভাষণে বলেন- যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। সেই নির্দেশনা মেনে এদেশের মানুষ যুদ্ধে যায়। জাতীয় ৪ নেতাসহ সব নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে যুদ্ধ পরিচালনা করতে হবে। সেটা করেই আমরা জয় লাভ করি। দুর্ভাগ্য যে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়। এরপরেই কারাগারে ৩ নভেম্বর চারনেতাকে হত্যা করা হয়।’
এই হত্যাকান্ডের পিছনে ছিলো খুনি মোস্তাক জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, খুনিচক্রের মুল শক্তি ছিলো জিয়াউর রহমান। সেনাবাহিনীতে উপসেনাপ্রধান হিসেবে যাকে রাখা হয়েছিল সেই ছিলো এই ষড়যন্ত্রে সক্রিয়। মোস্তাক টিকতে পারেনি, জিয়া ক্ষমতায় চলে আসে। এরা চক্রান্ত করে জাতির পিতাকে হত্যা করেছে।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আজকের বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস, তাদের যে বিভৎস চেহারা, পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করা এসব এই প্রথম হলো তা না। ২০১৩ তে, ২০১৫তে ঘটিয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে অত্যাচার করে, আটক রেখে আগুন দিয়েছে। ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। অগ্নি সন্ত্রাসে যে যেখানে থাকুক, যেই আগুন দিবে সাথে সাথে তারে প্রতিরোধ করতে হবে। এখন আবার অবরোধ দিয়েছে। এর আগেও দিয়েছিল। অফিসে বসে থেকে শেষমেষ তারাই অবরুদ্ধ হয়েছিলো। মানুষ অবরোধ মানে নাই।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপার্সন এতিমের টাকা মেরে নেওয়ার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তার বোন ভাই দেখা করেছে, সাজা স্থগিত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। কুলাঙ্গার পয়দা করে রেখে গেছে জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশকে অস্ত্র চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছিলো। মানি লন্ডারিং মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামরায় সে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সন্দেহ নেই। খালেদা জিয়া বলেছিলো, আওয়ামীলীগ একশবছরেও ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এটা বলতে পেরেছিলো তা বুঝা যায়। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বানিয়ে দিয়েছি আর সে ওখানে থেকে জ্বালাও পোড়াও নির্দেশ দেয়। এরা কিসের রাজনীতি করে? এরা মানুষ পুড়িয়ে রাজনীতি করে? কার স্বার্থে রাজনীতি করে? আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকারে এসেছি। ওয়াদা দিলে ওয়াদা রাখব।’