আন্তর্জাতিক

ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উদ্বেগ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটি। যুক্তরাষ্ট্র এই আইনের প্রয়োগ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের অনুষ্ঠান ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভের একপর্যায়ে এ কথা বলেন গারসেটি।

এ আইন প্রয়োগের ব্যাপারে গারসেটি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজের আদর্শের বাইরে যাবে না। আমেরিকাও অভিবাসীপূর্ণ একটি দেশ উল্লেখ করেন গারসেটি বলেন, ‘ভারতের নিরাপত্তার প্রয়োজন, তা আমরা বুঝি। কিন্তু নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা এবং সমতার আদর্শ গণতন্ত্রের একটি স্তম্ভ।’ ভারতের এক নাগরিকের বিরুদ্ধে আমেরিকার মাটিতে এক খালিস্তানিকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাটি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে কোনো ছেদ ফেলবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি মন্তব্য করেন, এ দুই রাষ্ট্রের গভীর সম্পর্কের মধ্যে প্রথম ধাক্কা এটা। তবে দুই দেশই তা সামলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় এ সম্পর্ক বর্তমানে শক্তিশালী। তবে আমরা আদর্শ থেকে সরে আসব না।

এরিকের সেই মন্তব্যের জবাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। এর আগে এক প্যানেল আলোচনার সময় এরিক সিএএ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘কেউ যত ভালোই বন্ধু হোক না কেন, নীতি ত্যাগ করা যায় না।’ ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে জয়শংকর বলেন, ‘দেখুন, আমি তাদের গণতন্ত্রের অপূর্ণতা বা তাদের নীতি কিংবা নীতিবোধের অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলছি না। আমি আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে তাদের বোধগম্যতা নিয়ে প্রশ্ন করছি। বিশ্বের অনেক জায়গা থেকেই অনেক মন্তব্য শোনা যাচ্ছে। আপনি যদি সেগুলো শোনেন, তাহলে মনে হয় যেন ভারতের ভাগাভাগি কখনো ঘটেনি। এমন কোনো সমস্যাই ছিল না।’ এস জয়শংকর আরো বলেন, ‘আমাদের সরকারেরও নীতিবোধ রয়েছে।’

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে আরো বলেন, ‘যদি আপনি একটি সমস্যা তুলে নিয়ে তা থেকে সমস্ত ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট মুছে ফেলেন এবং রাজনৈতিক শুদ্ধতার যুক্তিতে পরিণত করেন এবং বলেন, ‘আমার নীতি আছে এবং আপনার নীতি নেই, তাহলে বলব, আমারও নীতি আছে। এই সিএএ দেশভাগের সময় নিগৃহীত লোকদের জন্য এক বাধ্যবাধকতা। আর শুধু আমাদের দেশ নয়, অন্য দেশেও ধর্ম এবং জাতির ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টিকে ফাস্টট্র্যাক করেছে। এরকম অনেক উদাহরণ আছে। সোভিয়েতের ইহুদিদের জন্য জ্যাকসন-ভ্যানিক সংশোধনী, লউটেনবার্গ সংশোধনী, স্পেক্টার সংশোধনী এসেছিল, হাংগেরিয়ান বিপ্লবের পর হাঙ্গেরিয়ানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য, ১৯৬০ সালে কিউবানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য সংশোধনী আনা হয়েছিল।’ —হিন্দুস্তান টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d