চট্টগ্রাম

ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে চসিকের ৪৮ মাধ্যমিক বিদ্যালয়

ভারপ্রাপ্তদের উপর ভর দিয়ে চলছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো। চসিক পরিচালিত ৪৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৬টি বিদ্যালয়েই নেই প্রধান শিক্ষক। সে হিসেবে মোট বিদ্যালয়ের ৫৪ শতাংশ বিদ্যালয় চলছে প্রধান শিক্ষক ছাড়া। ফলে এসব বিদ্যালয়ের কোনটিতে সহকারী প্রধান আবার কোনটিতে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পাঠদানের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে শীঘ্রই এসব জটিলতা কাটাতে চসিকের শিক্ষা শাখায় বড় নিয়োগ আসছে বলে জানিয়েছেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা শাখা সূত্রে জানা যায়, শুধু প্রধান শিক্ষক পদে নয়-চসিক পরিচালিত ৪৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদেও পর্যাপ্ত জনবল নেই। এসব বিদ্যালয়ের ৫৩টি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১২ জন। সে হিসেবে ৭৭ শতাংশের বেশি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য। এছাড়া, প্রায় ১ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদের বিপরীতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে শিক্ষক রয়েছে মোট ৭১২ জন। এরমধ্যে স্থায়ী শিক্ষক ৫২০ জন এবং অস্থায়ী শিক্ষক ১৯২ জন। ৪১টি সহকারী শিক্ষকের পদই শূন্য।

কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রধান শিক্ষকের পদটি সম্পূর্ণ প্রশাসনিক। এ প্রশাসনিক পদে কাজের স্বার্থে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সময় প্রধান শিক্ষককে কঠোর হতে হয়। কিন্তু একজন সহকারী প্রধান এবং সহকারী শিক্ষকের পক্ষে সবসময় কঠোর হওয়া সম্ভব হয় না। দক্ষতা ও যোগ্যতার মাধ্যমে কিছু সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের কাজ ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারলেও অনেকেই তা পারে না। এছাড়া, একজন সহকারী শিক্ষক যখন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন, স্বভাবিকভাবেই তার পাঠদানে কিছুটা সমস্যা হয়ে থাকে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রধান শিক্ষক নেই পাথরঘাটা সিটি কর্পোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে। ওই মাস থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুপন ঘোষ।

তিনি বলেন, একটি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকলে বিভিন্ন জটিলতায় পড়তে হয়। একজন প্রধান শিক্ষক যেভাবে বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ সামলাতে পারে, ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে থাকা শিক্ষক সেভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারে না। এছাড়া, ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গেলে ক্লাসের সমস্যাও হয়।

চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকা এসব পদ শীঘ্রই পূরণ হবে। ইতোমধ্যে ১০ জন প্রধান শিক্ষক এবং ২৭ জন সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এসব পদের জন্য ইতোমধ্যে লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ভাইভা শেষে এসব পদের বিপরীতে নিয়োগ দেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, এটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা বিভাগে সবচেয়ে বড় নিয়োগ। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলে আশা করছি শিক্ষক সংকট কেটে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d