ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিয়ে বিএনপিতে মতবিরোধ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৯ অক্টোবর সকালে তার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার হন। আজ ২ নভেম্বর, এখন পর্যন্ত বিএনপি একজন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিয়োগ দিতে পারেনি।
বিএনপির লন্ডনে পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বলেছিলেন যে, একজন নেতা গ্রেপ্তার হলে তার দায়িত্ব দ্রুত আরেকজন নিবেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেফতার হওয়ার পরেই বিএনপিতে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিয়োগের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিলো। কে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হতে পারেন এ নিয়ে আলাপ আলোচনাও হয়েছিলো্। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিএনপি কাওকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেনি।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, দলের অভ্যন্তরীন কোন্দল এবং নেতাদের আত্বগোপনের কারণে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে কাওকে নিয়োগ দিতে পারছে না। সূত্রগুলো বলছে যে এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পছন্দ আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। কিন্তু আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীও এখন পলাতক। পুলিশ হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি তিনি। কাজেই তাকে মহাসচিব করা হলেই সরকার তাকে আবার গ্রেপ্তার করতে পারে, ফলে আবার ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের পদ শূন্য হয়ে যেতে পারে, এ বিষয়টি বিবেচনা করছে অনেকে।
আমির খসরু মাহমুদের বাইরে আরেকটি বিবেচনা ছিলো বিএনপির মধ্যে। তিনি হলেন রুহুল কবির রিজভী। রুহুল কবির রিজভী বিএনপির কর্মীদের কাছে পছন্দের নেতা। বিএনপির কর্মীরা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পর তাকেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দেখতে চেয়েছিলো। এখন অবশ্য তিনি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবেই দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে কোন কারনেই রুহুল কবির রিজভীকে পছন্দ করেন না। রুহুল কবির রিজভী দলে যেহেতু জনপ্রিয় এবং কেন কোন ক্ষেত্রে তারেকের চাইতেও তার জনপ্রিয়তার মাত্রা বেশি, এ কারনেই রুহুল কবির রিজভীকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের পদ দিতে চাননা তারেক। আর এ কারণেই বিএনপির মহাসচিব হিসেবে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে নজরুল ইসলাম খানের কথা আলোচনায় ছিলো। নজরুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। তবে তিনিও আত্বগোপনে আছেন। কিন্তু নজরুল ইসলাম খানের সাথে সরকারের গোপন আতাত রয়েছে এমন গুঞ্জন বিএনপিতে সবসময় শোনা যায়। তিনি সরকারের বিভিন্ন মহলের সাথে ঘনিষ্ট এ কারনেই আন্দোলনে তিনি অনেকটা নিষ্ক্রিয়, এমন বক্তব্য বিভিন্ন মহল থেকেই উচ্চারিত হয়। এ কারণেই নজরুল ইসলাম খানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
তবে কেউ কেউ বলছেন যে নজরুল ইসলাম খান যেহেতু অসুস্থ। এই কঠিন সময়ে তিনি দলের নেতৃত্ব দিতে পারবেন কিনা বা মহাসচিব হিসেবে দল পরিচালনা করতে পারবেন কিনা এ নিয়ে সংশয় থাকার কারনে তাকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। তবে একটি দল যখন একজন নেতার অনুপস্থিতিতে একজন ভারপ্রাপ্ত নেতা নির্বাচন করতে পারেনা, সে দলটি আন্দোলনকে কিভাবে এগিযে নেবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন । নেতৃত্বহীনতা এবং নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য লোক বাছার অভাবে বিএনপিতে এত সংকট তৈরি হয়েছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করেন।