আন্তর্জাতিক

ভারী বর্ষণে ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় শিবির প্লাবিত, রোগ ছড়ানোর শঙ্কা

টানা সাড়ে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের বর্বরোচিত বিমান হামলায় বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। স্থল পথেও সেনা অভিযান চলার কারণে ভূখণ্ডটিতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র মানবিক সংকট।

পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, বাড়িঘর হারিয়ে গাজার জনসংখ্যার বেশিরভাগই থাকছেন বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ও অস্থায়ী তাঁবুতে। আর এর মধ্যে ভারী বর্ষণে ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় শিবিরে বন্যা দেখা দিয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে দুর্ভোগের।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ভারী বর্ষণ তাঁবু ও আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। গত শুক্রবারের বৃষ্টির পানিতে হাজার হাজার শিবির প্লাবিত হয়েছে। এতে করে তাঁবু ও শিবিরের বাসিন্দারা জিনিসপত্র এবং কম্বল ও গরম কাপড় ছাড়াই থাকছেন।

ফিলিস্তিনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল আনাদোলুকে বলেছেন: ‘ভারী বৃষ্টিতে গাজার অনেক নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমরা গাজার বিভিন্ন গভর্নরেটে প্লাবিত তাঁবু এবং ঘরবাড়ি সম্পর্কে এক হাজারেরও বেশি সতর্কতা পেয়েছি।’

এই মুখপাত্র বলছেন, ‘ভারী বৃষ্টির জেরে জলাবদ্ধ পানি সরাতে পাম্পগুলো চালাতে এবং বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধারকারী যানগুলো নিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় পরিমাণে জ্বালানির অভাব সিভিল ডিফেন্স ক্রুদের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’

তাঁবুতে পানি আটকে থাকলে মানুষের মাঝে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ২৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ।

ইসরায়েলের এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d