দেশজুড়ে

ময়মনসিংহে ৫৫০ টাকার গরুর মাংস নিয়ে হট্টগোল

নিম্ন আয়ের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে পবিত্র রমজান মাসের বিগত ২১ মার্চ থেকে ময়মনসিংহ নগরীতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৫৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার (২৫ মার্চ) থেকে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরীতে ৫৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি শুরু হয়। রমজান মাসের প্রতি সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবার এই মাংস বিক্রয় করা হবে।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে নগরীর টাউন হল মাঠে একটি গরুর জবাই করে ভর্তুকি মূল্যে মাংস বিক্রি শুরু করে। এ সময় শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে মাংস কিনতে আসে। কিন্তু বেলা ১১টার দিকে গরুর মাংস কিনতে গিয়ে ক্রেতারা হঠাৎ হট্টগোল শুরু করে করে লাইন ভেঙে হুড়াহুড়ি ও ধাক্কাধাক্কি করে জোর করে মাংস কিনে নেন। এ সময় ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পবিত্র রমজান উপলক্ষে গত সোমবার প্রথম দিনে ৩০০ মানুষের মধ্যে ৫৫০ টাকা কেজি দরে ক্রেতাদের মধ্যে এক কেজি করে মাংস বিক্রি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে টাউন হল মাঠে প্রায় ৫০০ জন মানুষের কাছে একই দামে এক কেজি করে গরুর মাংস বিক্রি করার কথা ছিল। এ খবরে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই টাউন হল মাঠে গরুর মাংস কিনতে আসা শত শত মানুষ জড়ো হতে থাকে। এরপর মাংস বিক্রি শুরুর আগে টাউন হল মাঠের মূল ফটক বন্ধ করে ফটকের বাইরে ক্রেতাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে পর্যায়ক্রমে ক্রেতাদের মাংস কেনার সুযোগ দেওয়া হয়।

কিন্তু মাংস বিক্রির একপর্যায়ে হঠাৎ ক্রেতারা ধাক্কাধাক্কি করে ফটক খুলে বেশির ভাগ লোক একযোগে ভেতরে প্রবেশ করে মাংসের দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এতে ক্রেতাদের মধ্যে ধস্তাধস্তির কারণে শৃঙ্খলা ভেঙে যায়। এ সুযোগে ধস্তাধস্তির সময় অনেকেই টাকা দিয়ে আবার কেউ কেউ টাকা না দিয়ে এক কেজি ওজন করে রাখা গরুর মাংসের প্যাকেট নিয়ে চলে যায়। এতে মুহূর্তের মধ্যেই নির্ধারিত মাংস শেষ হয়ে যায়। ফলে অনেকেই শৃঙ্খলায় থেকে মাংস না পেয়ে নিরাশ হয়ে ফিরে যান।

মাংস কিনতে না পেরে ফিরে যাওয়া একজন নারী ক্রেতা বলেন, আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়াই। কিন্তু হঠাৎ করে হট্টগোল শুরু হওয়ার পর যে যার মত করে মাংস নিয়ে গেছেন। যে কারণে আমি আর কিনতে পারিনি।

বাংলানিউজকে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের খাদ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, মঙ্গলবার আমাদের মোট ৪৬৪ কেজি মাংস ছিল। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা ছিল এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। তারপরও শান্তিপূর্ণভাবে মাংস বিক্রি চলছিল। হঠাৎ টাউন হলের মূল গেইট ধাক্কাধাক্কি করে ক্রেতারা একযোগে ভেতরে প্রবেশ করলে বিশৃঙ্খলা ও হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী সাংবাদিকদের বলেন, রোজার মাসে আমরা সাধারণ মানুষের জন্য ভর্তুকি দিয়ে ৫৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আজ কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে আমরা চেষ্টা করব যেন শৃঙ্খলা বজায় থাকে। সম্ভব হলে আমরা সপ্তাহে দুই দিনের বদলে আরও বেশি দিন গরুর মাংস বিক্রি করতে চেষ্টা করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d