মাকে হারিয়ে দিশেহারা হাতির শাবক, ঘুরছে লোকালয়ে
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর জঙ্গল পাইরাং এলাকার গহীন পাহাড়ি এলাকায় দলছুট হয়ে মাকে হারিয়ে ফেলেছে ১৫ দিন বয়সী একটি হাতির শাবক। গত ৩ দিন ধরে অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবস্থায় দিশেহারা হয়ে হাতির শাবকটি বাঁশখালীর লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বন বিভাগের লোকজন হাতির শাবকটিকে বাঁচাতে ও হাতির পালের কাছে ফিরিয়ে দিতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। একইসাথে স্থানীয়রা হাতির শাবকটির সেবায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) বাঁশখালীর জঙ্গল পাইরাং এলাকার গহীন পাহাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত ১৬ অক্টোবর ওই এলাকার গহীন পাহাড়ে হাতি শাবকটি নরম কাদা মাটিতে আটকে পড়ে। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে হাতিটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বনে ছেড়ে দেয়। কিন্তু পরদিন ১৭ অক্টোবর পাইরাং এলাকার লোকালয়ে এসে পড়ে। পরে জলদী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ এর নেতৃত্ব বন বিভাগের একটি টীম ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতি শাবকটিকে উদ্ধার করে পরিচর্যা শুরু করে। এরপর বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার তত্ত্ববধায়নে চিকিৎসা দেওয়া হয়।এরপর আজ ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত হাতির শাবকটি পাইরাং এলাকায় রয়েছে। বন বিভাগের কর্মীরা সেটিকে বনে হাতির পালের সঙ্গে ভেড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এদিকে প্রতিদিন সকাল-বিকাল স্থানীয় উৎসুক জনতা হাতির শাবকটিকে দেখতে পাহাড়ের পাদদেশে ভিড় করছেন৷ তারা কেউ কেউ শাবকটিকে নানা কিছু খেতে দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ পরিচর্যা করছেন।
এ বিষয়ে জলদী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, আমরা হাতির শাবকটির চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে যাচ্ছি। হাতিটিকে পালের সঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষায় হাতির জীবন বাঁচানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তাকে পরিবেশে ফেরাতে তৎপর।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য বলেন, যেই হাতির পাল থেকে শাবকটি দলছুট হয়েছে ওই পালটি এখন আর সেই এলাকায় নেই। উদ্ধার হওয়া শাবকটি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবে খাবার ও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাতিটিকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যেখানে চিকিৎসকরা সহজে যাতায়াত করতে পারছেন। হাতিটি বনে ফিরে গেলে ভালো। না হয় আমরা অন্য কোনো ব্যবস্থা হাতে নিব।