আন্তর্জাতিক

মালদ্বীপ থেকে সেনা প্রত্যাহারে সম্মত ভারত

মালদ্বীপ থেকে নিজেদের সেনাদের প্রত্যাহার করে নেবে ভারত সরকার। রোববার (৩ নভেম্বর) এমনই তথ্য জানিয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮ এর ফাঁকে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুইজ্জু। এরপরই এই তথ্য জানান মালদ্বীপের এই প্রেসিডেন্ট।

মুইজ্জু সাংবাদিকদের বলেছেন, যে আলোচনা আমাদের হয়েছে, তাতে ভারত সরকার মালদ্বীপ থেকে তাদের সেনাদের সরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে। উন্নয়নমূলক প্রজেক্ট সম্পর্কিত যেসব ইস্যু রয়েছে, সেগুলো সমাধানে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনে রাজি হয়েছি আমরা।

মালদ্বীপে যেসব ভারতীয় সেনা ছিলেন তারা মূলত দুটি হেলিকপ্টার ও একটি ডোরনিয়ার বিমান পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এ দুটি হেলিকপ্টার ও বিমান মালদ্বীপকে ভারত উপহার হিসেবে দিয়েছে।

ভারত মালদ্বীপে নির্দিষ্ট কিছু সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে থাকে। এছাড়া দেশটিতে বিপর্যয় মোকাবেলায়ও সহায়তা করে থাকে তারা। ভারত সরকার মালদ্বীপকে একটি নৌ ডকইয়ার্ড তৈরিতে সহায়তা করছে।

উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ‘চীনপন্থি’ মোহাম্মদ মুইজ্জু। তিনি জয়লাভের পর থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে ভারত-মালদ্বীপের সম্পর্ক অন্যদিকে মোড় নিতে পারে। অনেকে আবার বলছেন, মুইজ্জু সরকারের সঙ্গে ভারতের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক মালদ্বীপের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

দীর্ঘদিন ভারতের প্রভাব বলয়ের অধীনে রয়েছে মালদ্বীপ। বর্তমানে দেশটির ক্ষমতায় রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ, যাকে ভারতপন্থি বলে দাবি করা হয়। ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মালদ্বীপকে তিনি নয়াদিল্লির খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু বানিয়ে ফেলেন। অনেকে বলেন, সোলিহ’র নীতিই ছিল- ইন্ডিয়া-ফার্স্ট।

অন্যদিকে, ৪৫ বছর বয়সী মুইজ্জুর রাজনৈতিক দল পিপিএম নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল। এ সময় চীনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলে মালদ্বীপ।

ভারত মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ পর্যবেক্ষণের জন্য কৌশলগতভাবে সুবিধাজনক জায়গায় অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্রটিকে নিজেদের প্রভাব বলয়ে রাখতে চায় ভারত। এজন্য দেশটিকে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের উন্নয়ন সহায়তাও দিয়েছে নয়াদিল্লি। এখন সেখান থেকে ভারতীয় সৈন্যদের চলে যেতে বাধ্য হওয়াটা মোদী সরকারের জন্য বড় একটি ধাক্কা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d