সুগন্ধির প্রতি মহানবী সা.-এর ভালোবাসা যেমন ছিল
সুগন্ধি ব্যবহার করা মুস্তাহাব এবং রাসূল সা.-এর সুন্নত। রাসূল সা. সুগন্ধি খুবই পছন্দ করতেন এবং তিনি প্রায় সবসময় সুগন্ধি ব্যবহার করতেন। তাঁর সুগন্ধি ব্যবহার সম্পর্কে এক হাদিসে হজরত আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন—
রাসূল সা. যখন আমাদের দিকে আসতেন তখন তাঁর সুগন্ধির কারণে আমরা আগে থেকেই টের পেতাম যে তিনি আসছেন। (আখলাকুন্নবী সা. ২১৮)
কিছু হাদিসের বর্ণনার মাধ্যমে বোঝা যায় যে, রাসূল সা. কোনো সুগদ্ধি ব্যবহার করা ছাড়াই একান্ত অলৌকিকভাবে তার পবিত্র শরীর থেকে যে ঘাম নির্গত হতো তারে ঘ্রাণ সাধারণ আতরের থেকেও উন্নত মানের। তাঁর শরীর থেকে সেই সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়তো। তনি যে পথ দিয়ে হেঁটে যেতেনে সেই পথও সুগন্ধিতে ভরে যেতো। সাহাবিরা সহজেই উপলদ্ধি করতে পারতেন যে এই পথে রাসূল সা. হেঁটে গেছেন।
কোনো কোনো সাহাবি রাসূল সা.-এর ঘামকে আতর হিসেবে ব্যবহার করতেন। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত উম্মে সুলাইম রা. বলেন, নবী সা. তার ঘরে এসে দুপুরের খাবারের পর বিশ্রাম নিতেন। তখন তিনি রাসূল সা.-এর বিশ্রামের জন্য একটি চামড়ার বিছানা বিছিয়ে দিতেন। তাঁর শরীর থেকে যে ঘাম ঝরতো তা একত্রিত করে তিনি খুশবু ও সুগন্ধির সঙ্গে মিশিয়ে নিতেন। একদিন রাসূল সা. তাকে বললেন, উম্মে সুলাইম! এটি কী জিনিস? উম্মে সুলাইম বললেন, এটি আপনার শরীরের ঘাম। আমি এগুলো নিজের আতর জতীয় দ্রব্যের সঙ্গে মিশিয়ে থাকি। কারণ, এই ঘাম সব ধরনের সুগন্ধির থেকে উন্নতমানের।
অপর এক হাদিসে হজরত আনাস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কখনো কোনো মৃগনাভি কিংবা কোনো যার সুগন্ধি নবী সা.-এর ঘাম মুবারক অপেক্ষা উত্তম। (শামায়েলে তিরমিজি।)
আরেক হাদিসে আয়েশা সিদ্দিকা রা. বলেন, সব থেকে উন্নত যে সুগন্ধি থাকতো আমি নবীজি সা.-এর গায়ে তা মাখিয়ে দিতাম। (মিশকাত।)
হজরত আনাস ইবনে মালিক রা. আরও বলেন যে, আমি এমন কখনো দেখিনি যে, রাসূল সা. -এর কাছে সুগন্ধি পেশ করা হলে তিনি তা ফিরিয়ে দিয়েছেন।
সুগন্ধি রাসূল সা.-এর এতোটাই প্রিয় ছিল যে, তিনি প্রিয়জন বা আপনজনের কাছে গিয়ে তা চেয়ে নিতেন। হজরত আনাস বিন মালিক রা. বলেন, রাসূল সা.-এর নিয়ম ছিল তিনি সব স্ত্রীর ঘরে গিয়ে সুগন্ধি খুঁজতেন। (আখলাকু্ন্নবী সা. ২২৭)
অপর এক হাদিসে আয়েশা রা. বলেন, রাসূল সা.-এর কাছে সবথেকে প্রিয় সুগন্ধি ছিল উদ বা আগর জাতীয় সুগন্ধি। (আখলাকু্ন্নবী সা. ২২৮)