ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় প্রস্তুত চট্টগ্রাম
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ইতিমধ্যেই চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। সৈকত সংলগ্ন এলাকা থেকে মানুষ যাতে আগেই নিরাপদ অবস্থানে সরে যায়, সেজন্য মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায়
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ৩টায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি বৈঠকে বসেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এর আগে চসিকের আওতাধীন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ছাড়তে ৫টি গাড়িতে মাইকিং শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মাইকিং শুরু করেছি। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ নিয়ে বিকালে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হবে। যার সভাপতিত্ব করবেন মাননীয় মেয়র। আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য ইতিমধ্যেই শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে ২৯০টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একইসাথে স্বাস্থ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কর্মস্থলে অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৬০৯টি আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও দুই হাজার ২৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং এক হাজার ২৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে।ইতিমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩৫৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা আছে। সেখানে উপকূলীয় এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে আসতে মাইকিং করা হচ্ছে। তারমধ্যে মিরসরাই উপজেলায় ৭৬টি, সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৫৯টি, আনোয়ারায় ৬টি, কর্ণফুলী উপজেলায় ১৭টি, বাঁশখালী উপজেলায় ১১০টি এবং সন্দ্বীপ উপজেলায় ৮৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রয়েছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় হামুনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উপকূলীয় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তত রাখার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে পারেন। পাশাপাশি উপকূল এলাকা থেকে মানুষ যাতে সরে যায় সেজন্য মাইকিংও করা হচ্ছে।’
এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নাম্বার ০২৩৩৩৩৫৭৫৪৫-এ যোগাযোগ করার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০২৩৩৩৩৫৪৮৪৩ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
প্রস্তুতি বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার সিভয়েসকে বলেন, আমাদের আশ্রয় কেন্দ্র গুলো খোলা আছে। ইতিমধ্যে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং চলমান রয়েছে। যাতে উপকূলী এলাকার বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসতে পারে। একইসাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকরা উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে কাজ করছে।’
তাছাড়াও ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বেশ কিছু নির্দেশনাও জারি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর চ্যানেলে অবস্থানরত লোকাল জাহাজ ও ছোট ছোট নৌযানগুলোকে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর উজানে সরে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়। একইভাবে বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত জাহাজগুলোর ইঞ্জিন চালু রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।