আন্তর্জাতিক

৩ হাজার শিশুর মৃত্যুর পরও কীভাবে নীরব থাকে বিশ্ব!

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত সাড়ে ৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আছে ৩ হাজারেরও বেশি শিশু। এই ধ্বংসযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, তিন হাজার শিশুর মৃত্যুর পরও কীভাবে নীরব থাকে বিশ্ব!

টানা তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। বিপুলসংখ্যক বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এ অবস্থায় ইসরায়েলি বাহিনীকে হামলা বন্ধের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। গত শনিবার রামাল্লায় পিএলও নির্বাহী কমিটির এক বৈঠকে আব্বাস এই আহ্বান জানান বলে ফিলিস্তিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে।

মাহমুদ আব্বাস বলেন, এই সংকটের শুরু থেকেই সমাধানের জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। বিশ্বনেতাদের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরালো করা, মানবিক সহায়তা প্রদান, বাস্তুচ্যুতি রোধ এবং জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও বাহিনীর আক্রমণ বন্ধের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আহ্বান জানানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্ত্বেও ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী বিপুল পরিমাণ গোলাবর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। কেড়ে নিচ্ছে হাজার হাজার নিরীহ মানুষের প্রাণ। হাসপাতালে বোমা হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ ও ৩ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যুর পরও পুরো বিশ্ব কীভাবে নীরব থাকতে পারে!’

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত এই ‘জঘন্য’ যুদ্ধের বিরুদ্ধে ঐক্য ও সহনশীলতা প্রদর্শনের জন্যও গাজা, পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বাস্তুচ্যুতি থামানো এবং চলমান নাকবা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে মাহমুদ আব্বাস প্রতিশ্রুতি দেন, ধ্বংস হয়ে যাওয়া সবই আবারও গড়ে তোলা হবে।

এদিকে গাজায় চলমান আক্রমণ আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। এই পরিস্থিতিতে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষিত করার জন্য জরুরি আবেদন জানিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রসের (আইসিআরসি) প্রেসিডেন্ট মিরজানা স্পোলজারিক। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘মানুষের দুর্ভোগের অসহনীয় মাত্রায় আমি মর্মাহত এবং সংঘাতরত পক্ষগুলোকে এখনই এই দুর্ভোগ প্রশমিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

সংঘাতের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান করার অনুরোধও করেন মিরজানা স্পোলজারিক। তিনি বলেন, ‘এত বেসামরিক মানুষের মর্মান্তিক ক্ষতি দুঃখজনক। ব্যাপক বোমাবর্ষণের মধ্যে গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের যাওয়ার জন্য কোনো নিরাপদ জায়গা না থাকাটা অগ্রহণযোগ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘সামরিক অবরোধ জারি রাখার ফলে গাজায় বর্তমানে পর্যাপ্ত মানবিক কর্মকাণ্ড চালানো সম্ভব নয়। এই সর্বনাশা ব্যর্থতা সহ্য করা উচিত নয় বিশ্বের।’ তিনি ফিলিস্তিনিদের রক্তপাত বন্ধে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d