‘অগ্নিসন্ত্রাস’ প্রতিরোধে শপথ নিলেন হাজারো মানুষ
‘অগ্নিসন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে শান্তির জন্য রাজধানীর গুলশানে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়ে শপথ নিয়েছেন। ‘RISE FOR PEACE বা জেগে ওঠো শান্তির পথে’ শীর্ষক এ কর্মসূচির আয়োজন করে ‘অগ্নিসন্ত্রাসে’ ক্ষতিগ্রস্তদের সংগঠন অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ।
শনিবার গুলশান-২ গোলচত্বরে (ল্যান্ডমার্ক কর্নার) সংগঠনটি এ আয়োজন করে। আয়োজনটির সার্বিক সহযোগিতা করে গতিপথ তথ্য ও গবেষণা সংস্থা।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন ক্লোজআপ ওয়ান তারকা রাজীব এবং আবিদ অমি। কর্মসূচিতে অগ্নিসন্ত্রাসে নিহতদের পরিবার ও আহতরা অংশ নিয়ে তাদের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
এ সময় অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার এসব মানুষের সঙ্গে একাত্মতা জানাতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, চিত্রনায়িকা নিপুন, সাবেক সংসদ সদস্য তারানা হালিম, শেরে বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবদুস সাত্তার, অভিনেতা সিদ্দিক, তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ, সাংবাদিক নিয়াজ জামান সজীব প্রমুখ এ সময় একাত্মতা ঘোষণা করেন।
তারানা হালিম বলেন, ২০১৪ সালে শুধু এই অপশক্তি ২১ জন পুলিশই হত্যা করেছে। এছাড়া ১৫০টি বাস পুড়িয়েছে। এদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বয়কট করুন করতে হবে।
গুলশান এলাকার সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত একাত্মতা জানিয়ে বলেন, ‘মানুষ পুড়িয়ে মারা কৌশল নয়, অপকৌশল। কারা এগুলো করছে আমরা জানি। তাদের প্রতিহত করতে হবে।’
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন জানান, তিনিও অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার। তিনি যে বাসে ছিলেন, সেই বাসে আগুন দেওয়া হয়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আজ কেন এই কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে আমাদের? সৃষ্টিকর্তার দয়ায় আমি বেঁচে আছি। ২০১৩ সালে ২৮ নভেম্বর আমার জন্য বিভীষিকা। হুকুমদাতাদেরও বিচারে আওতায় আনাতে হবে।’
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের দিন নিহত পুলিশ সদস্য এনামুল পারভেজের ছোট্ট সন্তান তানহা ইসলাম ও স্ত্রী রুমা আক্তার অনুষ্ঠানে যোগ দেন। রুমা আক্তার তার মেয়েকে দেখিয়ে বলেন, সবার বাবা আছে। ওর বাবা নেই। পৃথিবীতে কারও সঙ্গে যেন এমন না হয়।
বিএনপির মহাসমাবেশের পরদিন নিহত পুলিশ সদস্য আবু নাইমের মা পারভীন বেগন ও বাবা আলম চৌকিদারও এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তারা ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চান এই বাবা-মা।
সাংবাদিকদের পক্ষে নিয়াজ জামান সজীব বলেন, ‘আমরা তো দায়িত্ব পালন করতে যাই, আমরা কেন সন্ত্রাসের শিকার হই? আমরা তো কোনো একটা ঘটনারও বিচার পাইনি।’
আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বাবুল, ‘অগ্নিসন্ত্রাসে’ নিহত নাহিদার মা রুনি বেগম, ‘অগ্নিসন্ত্রাসের’ শিকার সালাউদ্দিন ভুঁইয়া, রফিকুল ইসলাম, গীতা সেন ও এনামুল কবির।