অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান ক্ষতিকর
গরম মানেই কাজ সেরে ঘেমে নেয়ে, গলদঘর্ম হয়ে বাড়ি ফিরে ফ্রিজের দিকে হাত। কয়েক ঢোক বরফ-ঠান্ডা পানি খেয়ে তারপর শান্তি। চড়া রোদ থেকে ফিরে ঠান্ডা পানি সাময়িক স্বস্তি দিচ্ছে হয়তো, কিন্তু এ সাময়িক স্বস্তিই পরে সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে। গরমে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খেলে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গলার সংক্রমণ : রোদ থেকে ফিরেই ঢক ঢক করে ঠান্ডা পানি খাওয়ার অভ্যাসে বাড়তে পারে গলায় সংক্রমণের ঝুঁকি। ঘন ঘন ফ্রিজের পানি খাওয়ার কারণে এমনিতেই গলাব্যথা, সর্দি-কাশির সমস্যা লেগেই থাকে। তবে গরমে এ সমস্যা আরও বেশি বাড়ে। বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়ার পর ফ্রিজের পানি খেলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। কারণ, গলায় ও শ^াসযন্ত্রে মিউকাসের পরিমাণ বেড়ে যায়।
পানির চাহিদা পুরোপুরি পূরণ না হওয়া : ঠান্ডা পানিতে খুব দ্রুতই তৃষ্ণা মেটে। ফলে শীতলতার কারণে পানির চাহিদা কম অনুভূত হয়। মনে হয়, আর পানি পানের দরকার নেই। অথচ শরীরে পানির চাহিদা থেকেই যায়। পানির এ ঘাটতি থেকে পানিশূন্যতা তৈরি হয়, যা শরীরের অন্যান্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
দুর্বল হৃদস্পন্দন : বরফগলা ঠান্ডা পানি হৃদস্পন্দনের হার কমিয়ে দেয়। ‘ক্রেনিয়াল’ স্নায়ু হৃদস্পন্দনের হার নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু ঠান্ডা পানি খাওয়ার ফলে এই স্নায়ু শিথিল হয়ে পড়ে, সংকুচিত হয়ে যায়। ফলে হৃদস্পন্দনের হারও কমতে থাকে।
হজমে গোলমাল : অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি হজমজনিত সমস্যার কারণ হতে পারে। এতে রক্তনালির সংকোচন ঘটে; যার ফলে হজমক্রিয়া ব্যাহত হয়। কারণ, ঠান্ডা পানিতে পাকস্থলী সংকুচিত হয়ে যায়, যা খাওয়ার পর হজম প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তোলে। তা ছাড়া ঠান্ডা পানি খেলে পরিপাকতন্ত্রও দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ওজন বেড়ে যাওয়া : অত্যধিক ঠান্ডা পানি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে বলে মত চিকিৎসকের। শরীরের বাড়তি মেদ সহজে ঝরতে চায় না; বরং ফ্যাট আরও বেশি করে জমতে শুরু করে। এ কারণে ডায়েটে ঠান্ডা পানি রাখতে বারণ করে থাকেন চিকিৎসকরা।
দাঁত শিরশিরানি : অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খেলে দাঁতের সমস্যাও হতে পারে। দাঁতে যন্ত্রণা থেকে শুরু করে শিরশির করা-সবই হতে পারে। এ ছাড়া মাড়ির নানা সংক্রমণও দেখা দিতে পারে। তাই গরম লাগলেও ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলুন।