অর্থবহ সংলাপসহ ৫ সুপারিশ মার্কিন প্রতিনিধিদলের
সুষ্ঠু নির্বানের লক্ষ্যে সংলাপসহ ৫ দফা সুপারিশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দল। রোববার (১৫ অক্টোবর) ঢাকা সফর শেষে প্রতিনিধি দল এক বিবৃতিতে এই সুপারিশ করে।
প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে পারে এমন বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং অহিংস নির্বাচনের দিকে অগ্রগতির জন্য একটি রোডম্যাপ হিসেবে ৫ দফা সুপারিশ করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে ১. নির্বাচন ইস্যুতে মুক্ত ও খোলামেলা সংলাপের আয়োজন করতে হবে।
২. মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা এবং একটি উন্মুক্ত নাগরিক স্থান নিশ্চিত করা, যেখানে ভিন্নমতকে সম্মান করা হয়।
৩. অহিংসায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা এবং রাজনৈতিক সহিংসতার অপরাধীদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।
৪. সব দলকে অর্থবহ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ার জন্য শর্ত তৈরি করতে হবে। যার মধ্যে স্বাধীন নির্বাচন পরিচালনাকে শক্তিশালী করতে হবে।
৫. নাগরিকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সক্রিয় নির্বাচনী অংশগ্রহণের সংস্কৃতি প্রচার করতে হবে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের দৃঢ় ঐতিহ্য দেশটির একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার ২০৪১ সালের রূপকল্প অর্জনের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করেছে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ নির্বাচনী অখণ্ডতার জন্য বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- রাজনৈতিক সহিংসতা, অনিশ্চয়তা ও ভয়ের পরিবেশ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিকদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি। রাজনৈতিক নেতা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের. নারী, যুবক এবং অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীও নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বাধার সম্মুখীন হয়।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ একটি সন্ধিক্ষণে রয়েছে এবং আসন্ন নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক, অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি দেশের অঙ্গীকারের একটি লিটমাস পরীক্ষা।
উল্লেখ্য, আগামী জাতীয় নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল ৮-১৩ অক্টোবর ঢাকা সফর করে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের জন্য এনডিআইয়ের নীতিমালার ঘোষণা অনুযায়ী স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে একটি যৌথ প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন মিশন (পিইএএম) পরিচালনা করে।
প্রতিনিধি দলে ৬ জন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ছিলে। তারা হলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল এফ. এন্ডারফার্থ, সাবেক ডেপুটি ইউএসএআইডি প্রশাসক বনি গ্লিক, মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক সদস্য মারিয়া চিন আবদুল্লাহ, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির সাবেক সহযোগী কাউন্সেল জামিল জাফর, এনডিআই এশিয়া-প্যাসিফিক বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক মনপ্রীত সিং আনন্দ ও আইআরআই’র এশিয়া-প্যাসিফিক ডিভিশনের সিনিয়র ডিরেক্টর জোহানা কাও।
প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, সরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নাগরিক পর্যবেক্ষক, নারী ও যুব গোষ্ঠীসহ সুশীল সমাজ সংস্থা, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া সংস্থা এবং বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের সঙ্গে দেখা করে।