অলসতা দূর করার ৫টি কার্যকর উপায়
কোনো একটা কাজ আজ করব, কাল করব বলে ফেলে রেখেছেন? সেই কাজ কি আর করাই হয়ে উঠছে না? সেটা হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের টার্ম পেপার রেডি বা অফিসের কোনো প্রেজেন্টেশনের কাজ। কিংবা বিদ্যুৎ বিল, কোনো সার্ভিস চার্জ জমা দেওয়ার কাজ। সবই পড়ে থাকে ডেডলাইনের আগের রাতে বা শেষ দিনে করার জন্য। আবার আজ চিকিৎসকের কাছে যাব কি না, ভাবতে ভাবতে দিনই পার হয়ে যায়।
ইংরেজ দার্শনিক বার্নার্ড উইলিয়ামস বলেন, অলস ব্যক্তিদের দুটি পন্থা—এটি পারব না এবং ওটা দরকার নেই। আমরা কাজ সাধারণত কেন ফেলে রাখি? সাধারণত ব্যর্থতার ভয় থেকে অথবা কাজটির গুরুত্ব অনুধাবনের ব্যর্থতা থেকেই এমনটা হয়। শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ফুসচিয়া সিরোইস বলছেন, ‘আলস্য বা সময় ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা সমস্যা নয়। আপনি যদি উদ্বিগ্ন হন এই ভেবে যে আপনি ব্যর্থ হবেন, তাহলে কাজ ফেলে রাখার যুক্তি তৈরি হবে।’ তাই ব্যর্থতার ভয় ঝেড়ে ফেলে দিয়ে ইতিবাচক দিকটি দেখুন: হয়তো কিছু শিখবেন বা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আনন্দ পাবেন।
আমেরিকান জনপ্রিয় গিটারিস্ট জিমি লায়ন অলসতা নিয়ে বলেন, অলস ব্যক্তির জীবনে সারা বছরে একটিই দিন, তা হলো আগামীকাল। কিন্তু এই আগামীকাল তো আর আসে না। আর তাই অলসতা ঝেড়ে ফেলতে অনেক রকম কাজ করবেন ভেবে রেখে লম্বা লিস্ট করে রেখেছেন। এ কাজ ভুলেও করবেন না। এতে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না করতে পেরে আরও হতাশায় ভুগতে হতে পারে। জমা কাজগুলো বরং ভাগ করে নিন। একসঙ্গে না করে একেক দিন একেকটি কাজ রাখুন। প্রয়োজনে কারও সহযোগিতা নিতে পারেন। ছোট ছোট পদক্ষেপের সফলতা বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে আপনাকে, যা বরং পরবর্তী সময়ে বড় কোনো পদক্ষেপে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
আমেরিকান মনোবিদ পিটার গলউইটজার অগ্রিম পরিকল্পনার কৌশলের ওপর ৯৪টি সমীক্ষা পর্যালোচনা করেন। তাঁর মতে, যারা কৌশলটি অনুসরণ করে, তারা অন্যদের চেয়ে লক্ষ্য অর্জনে দু-তিন গুণ বেশি দৃঢ় থাকে। কৌশলটি কেমন? ধরুন, আপনি উপলব্ধি করতে পারছেন, আপনার মধ্যে আলসেমি করার একটি প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। তাহলে মানসিকভাবে একটি কৌশল নিন। কেউ যদি আপনাকে সপ্তাহের শেষে কোনো মিটিংয়ের কথা বলে, আপনি বরং বলুন মিটিংটি আজ সন্ধ্যায়ই সেরে ফেলার। ক্যারেন ল্যাম্ব অলসতা নিয়ে দারুণ উক্তি দিয়েছিলেন, সেটি হলো জীবনে যদি কিছু ত্যাগ করতেই হয়, তবে ত্যাগ করো অলসতা, বাহানা এবং সঠিক সময়ের অপেক্ষা করা।
একটানা অনেকক্ষণ কাজ করলে কাজের মধ্যে একঘেয়েমি চলে আসে। কাজ করতে ইচ্ছা করে না। কাজের মধ্যে নতুনত্ব নিয়ে আসুন। কাজ করার স্থান থেকে শুরু করে যেকোনো কিছুতেই আনতে পারেন পরিবর্তন। এতে কাজের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।
ভালো একটা দিন কাটাতে হলে দিনের শুরুটা হওয়া উচিত প্রাণবন্ত। নিজের ভালো লাগা থেকেই চিন্তা করতে পারেন কীভাবে শুরুটা প্রাণবন্ত করা যায়। খুব সকালে কেউ শরীরচর্চা করে, কেউবা দিনের শুরুটা শুরু করে গান শুনে। এমন অনেক উপায় হতে হতে পারে প্রাণবন্তভাবে শুরু করার। নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে উঠে শরীরচর্চা করলে স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকে, তেমনি অলসতায় দূর হয়। নাশতার মেন্যুতে পুষ্টিকর খাবার রাখুন। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে হাসিমুখে পরিবারে সবার সঙ্গে কথা বলুন। কর্মস্থল বা গন্তব্যে যেতে যেতে গান শুনতে পারেন।