‘আক্বিদায়ে খতমে নবুওয়ত মুসলিম উম্মাহর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাস’
‘আক্বিদায়ে খতমে নবুওয়ত হেফাজতের গুরুত্ব ও মাহে রমজানের তাৎপর্য’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে সৌদি আরবের মদিনা মুনাওয়ারায়। সোমবার আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত সৌদি আরবের উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত সৌদি আরবের সভাপতি মাওলানা সাইয়েদ রফিকুল ইসলাম মাদানীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ মুহিউদ্দিন রাব্বানী।
তিনি বলেন, ‘খতমে নবুওত-এর অর্থ হল, আল্লাহ তাআলা হযরত আদম আলাইহিস সালাম-এর মাধ্যমে নবুওত ও রিসালাতের যে পবিত্র ধারা শুরু করেছেন, হযরত মুহাম্মাদ সা. কে পৃথিবীতে প্রেরণের মাধ্যমে সেই ধারাকে সমাপ্ত করেছেন। আমরা যে কালিমা পড়ি তার দুটি অংশ। প্রথম অংশে তাওহীদের আলোচনা রয়েছে। অর্থাৎ এ স্বীকারোক্তি দেয়া যে, আল্লাহ তাআলা তাঁর কুদরত, সৃষ্টি, রিযিক দান ও ইচ্ছা-অনিচ্ছাসহ সকল গুণাবলীর ক্ষেত্রে এক ও অদ্বিতীয়। দ্বিতীয় অংশে রেসালাতের আলোচনা রয়েছে। অর্থাৎ একথার স্বীকারোক্তি ও সাক্ষ্য দেওয়া যে, হযরত মুহাম্মাদ সা. আল্লাহ তাআলার রাসূল। ঠিক সে পরিমাণ মজবুতি ও তাকিদের সাথে এবং আস্থা ও বিশ্বাসের সাথে একথারও সাক্ষ্য দেওয়া যে, হযরত মুহাম্মাদ সা. আল্লাহ তাআলার প্রেরিত সর্বশেষ নবী ও রাসূল।’
আল্লামা শায়েখ মুহিউদ্দিন রাব্বানী আরো বলেন, ‘আক্বিদায়ে খতমে নবুওয়ত মুসলিম উম্মাহ’র জন্য এমন গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাস, যা কেউ অস্বীকার করলে সে সরাসরি কাফের হয়ে যায়। এমনকি এই ব্যপারে সামান্যতম সন্দেহ করলেও ঈমান থাকে না। আজ আহমাদিয়া জামাত তথা কাদিয়ানী সম্প্রদায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সর্বত্র খতমে নবুওয়তের আক্বিদা অস্বীকার করে বিভিন্ন রকম ছলচাতুরি ও ধোঁকার মাধ্যমে সাধারণ মুসলমানদের ঈমানহারা করছে। আমাদেরকে তাদের অপতৎপরতা ও ধোঁকাবাজির ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহকে সজাগ ও সচেতন করার মাধ্যমে নবিজী সা. এর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য খতমে নবুওয়ত হেফাজত করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা সাইয়েদ রফিকুল ইসলাম মাদানী বলেন, ‘আমরা মুসলমান। আমাদের বিশ্বাস হলো হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল। তারপরে নতুন করে কেউ নবী রাসুল হিসেবে আগমন করবে না। এটা কুরআন-সুন্নাহ ইজমা-কিয়াসের সর্বসম্মত বক্তব্য। উপরোক্ত বিষয়টি দ্বীন ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস। যা অস্বীকার করলে বা সন্দেহ পোষণ করলে ঈমান থাকে না। অথচ তথাকথিত ‘আহমদীয়া মুসলিম জামাত’ নামধারী কাদিয়ানিরা নিজেদের মুসলিম দাবি করলেও উল্লেখিত বিশ্বাসটি অস্বীকার করে। যার ফলে তারা মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাস থেকে বের হয়ে যায়। তাদের নতুন এক ধর্ম বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত হয়, সেটা হল কাদিয়ানী ধর্মমত। আমরা বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশেরমত কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার জন্য বাংলাদেশ সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।’
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, ‘তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মুফতী মাসঊদুল করীম, সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ, মাওলানা ফারুক আহমাদ, মাওলানা ইরফান বিন খালেদ, মাওলানা খোরশেদ আলম, এম এম আজহারুল ইসলাম মাদানী, মাওলানা নাঈম বিন রফিক, মাওলানা যিয়াদ বিন সাঈদ, মাওলানা আবু ইউসুফ, মাওলানা সফওয়ান প্রমুখ।