আজ নাজিরহাট হানাদার বাহিনী মুক্ত দিবস
নাজিরহাট হানাদার মুক্ত দিবস আজ। উত্তর চট্টগ্রামের অন্যতম রণাঙ্গন নাজিরহাটে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। এদিন ভোরে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে পাক হানাদার বাহিনী পিছু হটে।
পাক বাহিনী চলে যাওয়ার পর শুরু হয় মুক্তিকামী ছাত্র জনতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের আনন্দ উল্লাস। দিনভর ফটিকছড়ি ও হাটহাজারীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধা এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জওয়ানেরা চাঁদের গাড়িতে করে কামান ও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মানচিত্র খচিত পতাকা নিয়ে আনন্দ উল্লাস করে নাজিরহাটে সমবেত হন। চলছিল বিজয়ের উল্লাস।
গোপনে সংবাদ পেয়ে পলাতক পাক হানাদার বাহিনী সন্ধ্যায় হাটহাজারীর অদুদিয়া মাদ্রাসার সামনে থেকে ৩–৪টি যাত্রীবাহী বাসে করে নাজিরহাট আসে। তারা উল্লাসরত মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ জনতার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। শুরু হয় উভয়ের মধ্যে সম্মুখযুদ্ধ। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা নায়ক তফাজ্জল হোসেন (বরিশাল), সিপাহি নূরুল হুদা (কুমিল্লা), সিপাহি অলি আহাম্মদ (খুলনা), সিপাহি নূরুল ইসলাম (সন্দ্বীপ), সিপাহি মানিক মিয়া (চট্টগ্রাম), ফোরক আহাম্মদ (নাজিরহাট), হাসিনা খাতুন (নাজিরহাট), আবদুল মিয়া (নাজিরহাট), নূরুল আবসার (কুমিল্লা), মুক্তিযোদ্ধা মুজিবর হক (ফরহাদাবাদ) ও অজ্ঞাতনামা একজনসহ ১১ জন শহীদ হন। এরপর পাক বাহিনী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত নাজিরহাট, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিসংযোগ লুটতরাজ, নাজিরহাট হালদা নদীর সেতু ধ্বংস হত্যাযজ্ঞসহ নারকীয় কর্মকাণ্ড চালায়।
নাজিরহাট হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নাজিরহাট গণকবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি, খতমে কোরআন, বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহফিল।