চট্টগ্রামপার্বত্য চট্টগ্রাম

আজ বিজয়ের সূর্য উদিত হয়েছিল রাঙামাটিতে

রাঙামাটি: রাঙামাটি হানাদার মুক্ত দিবস আজ। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় পার্বত্য জেলা রাঙামাটিও পাকিস্তান বাহিনীর দখলে ছিল। আজকের দিনেই পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়ে রাঙামাটিতে বিজয়ের সূর্য উদিত হয়েছিল।

যেভাবে রাঙামাটিতে যুদ্ধের দামামা বেজেছিল: ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ডাকের বজ্রধ্বনি শুনার পর ২৭ মার্চ তৎকালীন পার্বত্য অঞ্চলের জেলা প্রশাসক হোসেন তৌফিক ইমাম (এইচ.টি. ইমাম), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবদুস সামাদ, পুলিশ সুপার বজলুর রহমান এবং মহকুমা প্রশাসক আবদুল আলীর নেতৃত্বে রাঙামাটি স্টেশন ক্লাবের মাঠে মুক্তিযুদ্ধের অস্থায়ী ট্রেনিং ক্যাম্প চালু করা হয়।

২৯ মার্চ রাঙামাটি থেকে ৬০ জনের একটি দল প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ভারতে যাত্রা করে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রসদ এবং যানবাহন সুবিধার্তে শহরের আলম ডকইয়ার্ড এলাকায় গড়ে তোলা হয় মুক্তিবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প। স্থাপন করা হলো ওয়ারলেস সেন্টার। রাঙামাটি থেকে ভারতে যাওয়া প্রথম মুক্তিযোদ্ধা দলটি এক সপ্তাহের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষে ক্যাপ্টেন আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ১৫ এপ্রিল রাঙামাটি আসে। কিন্তু স্থানীয়দের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে প্রথম দলটি জেলা প্রশাসকের বাংলো এলাকায় হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত হয়।

দ্বিতীয় দলটি রাঙামাটি শহরের কাঠালতলীস্থ আলম ডকইয়ার্ডে উঠে সেখানে অবস্থান নেয় এবং তৃতীয় দলটি রাঙামাটি সদর এলাকার বাকছড়িতে অবস্থান নেয় এবং পরদিন হানাদার বাহিনীর ওপর হামলা চালায় তারা। ১ নম্বর সেক্টর হেডকোয়ার্টার ছিল রাঙামাটির বরকল উপজেলার হরিণায়। আগস্ট মাসের শুরুতে ১ নম্বর সেক্টরের সাবসেক্টর স্থাপন করা হয় ভারতের মিজোরাম প্রদেশের বৈষ্ণবপুরে। ১৯৭১ সালের ৫ মে, ১ নম্বর সেক্টরের অধীন ২৫ সদস্যের পার্বত্য চট্টগ্রাম মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করা হয়। হেমদা রঞ্জন ত্রিপুরাকে কোম্পানি কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়।

মিত্র ও মুক্তিবাহিনীরা জৈলানন্দ সিং এবং সুলতান আহমদ কুসুমপুরীর নেতৃত্বে ৫০০ মুক্তিযোদ্ধার দল বরকলে ১৫ ডিসেম্বর ভোরে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর আক্রমণ করলে বিকেলে পাঞ্জাবিরা রাঙামাটির উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়। তাদের অনুসারী বাঙালি রাজাকার, আলবদর ও বেলুচ সৈন্যদের দলটি যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d