আনোয়ারাচট্টগ্রাম

আনোয়ারায় কাপড়ের রং দিয়ে তৈরি হচ্ছিল নকল আইসক্রিম

চট্টগ্রামের আনোয়ারার অনুমোদনহীন কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের কাপড়ের রং ও কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল আইসক্রিমসহ বিভিন্ন শিশু খাদ্য। এসব আইসক্রিম খেয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে শিশু ও বিভিন্ন বয়সী মানুষ।

সোমবার (২৪ জুন) বিকেলে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের চাতরী চৌমুহনী বাজারে পশ্চিমে এমাবুদ ভবন এলাকায় একটি টিনসিটের ঝিগিরি ঘরে গড়ে উঠা আফিয়া আইসক্রিম ফ্যাক্টরি নামে কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে প্রশাসন।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হোসাইন মোহাম্মদ। এ সময় বিএসটিআইয়ের ফারহানা জাহান পারুল, থানার পুলিশের উপ পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনসহ পুলিশের একটি টিম।

সরেজমিনে গিয়ে ও আদালত সূত্র জানা যায়, আইসক্রিম তৈরি করতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-এর অনুমোদন লাগলেও এই কারখানায় নেই কোনো অনুমোদন।

একটি টিনসিটের ঝিগিরি ঘরে গড়ে উঠা আফিয়া আইসক্রিম ফ্যাক্টরি নামে একটি কারখানায় তৈরি হচ্ছিল ডিম্পল মিল্ক ভিটা আইসক্রিম, পাংশার পিপাসা আইসক্রিম ও বস আইসক্রিম, হ্যাপী আইসক্রিম, আইসক্রিম দইসহ বিভিন্ন শিশু খাদ্য। এসব খাদ্য আকর্ষণীয় করতে মেশানো হচ্ছে কাপড়ের রং। চিনির পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর ঘনচিনি, আম ও লিচুর স্বাদের জন্য কেমিক্যাল এবং গরুর দুধের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে ভেজাল গুঁড়াদুধ। অপরিচ্ছন্ন বালতিতে খালি হাতেই মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকারক সব উপকরণ।

এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর এসব আইসক্রিমে বাহারি সব মোড়কে সরবরাহ করা হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন দোকানে। প্রচণ্ড দাবদাহে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য শিশুদের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আইসক্রিম মুখে দেয়। এতে শিশুরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন বলেও জানা যায়।

বিএসটিআইয়ের ফারহানা জাহান পারুল বলেন, অভিযানে গিয়ে নকল আইসক্রিম তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া ওই আইসক্রিমের কারখানার মালিক কোনো ধরনের কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হোসাইন মোহাম্মদ বলেন, ওই নকল আইসক্রিমের কারখানায় যে আইসক্রিম তৈরি করা হতো- তার লেবেল, মোড়ক কিংবা বিএসটিআইয়ের কোনো অনুমোদন ছিল না। পরে কারখানা মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এর আগে উপজেলার কালাবিবি দীঘির মোড় টানেল রেস্টুরেন্টেকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ খাবার তৈরি ও পরিবেশনের অভিযোগে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও মো. ইশতিয়াক ইমন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d