আবহাওয়া অফিসের টেলিফোনে রিং পড়ে, কেউ ধরে না!
৭ ডিসেম্বর, মেঘলা আকাশ। প্রকৃতিতে বইছে আলতো হিমেল হাওয়া। কোথাও কোথাও ঝরছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। জমানো কালো মেঘের ঘনঘটায় মনে হবে এই বুঝি ঝাঁপিয়ে নামছে বৃষ্টি। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও বৃষ্টির দেখা মেলেনি। কালও কি আবহাওয়া এমন থাকবে নাকি বৃষ্টি ঝরিয়ে রোদের দেখা মিলবে তা জানতে টানা যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি আবহাওয়া অফিসের কাউকে। কিন্তু আবহাওয়া অফিসের টেলিফোন নম্বরে অনবরত রিং পড়ছে, ফোন ধরছে না কেউ।
পরে জানা গেল গত ২০ দিন ধরে বিকল চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের একমাত্র টেলিফোন লাইন। গত ১৭ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় মিধিলির পর থেকেই টেলিফোন লাইনটি নষ্ট হয়ে আছে। এতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। আর জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ বিঘ্নিত হওয়া ছাড়াও আবহাওয়া অফিসে কেউ যোগাযোগ করতে পারছেন না। তবে গত ২০ দিন ধরে এ সমস্যা তৈরি হলেও এখনো পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের টনক নড়েনি।
জানা গেছে, পতেঙ্গা এয়ারপোর্ট এলাকায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) কোনো ক্যাবল নেই। যে কেবল লাইন আছে তা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের। ওই ক্যাবল লাইন কাটা পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে।
এ বিষয়ে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, সরকারি কাজ বলে কথা তার উপর আবহাওয়া অফিস। এতো চিঠি লেখালেখি করেও সমস্যার কোনো সুরাহা হচ্ছে না। তাছাড়া আমাদের বিকল্প কোনো নাম্বার নেই।’
তাহলে আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ কিভাবে সম্ভব— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত নাম্বার যাদের কাছে তারা যোগাযোগ করে নিচ্ছে। আর এয়ারপোর্ট এক্সচেন্জারের একটি ইন্টারকমের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। টেলিফোন নম্বর বিকল থাকলেও ওয়েবসাইট সচল আছে। ওয়েবসাইটে আবহাওয়ার তথ্য দেওয়া আছে। কিন্তু প্রয়োজনে মানুষ সেভাবে সেবাটা পাচ্ছে না।’
কবে নাগাদ লাইন মেরামতের কাজ শুরু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে বিটিসিএলের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চাইলেই করতে পারছি না। সংরক্ষিত এলাকা তাই কাজের আগে অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি ছাড়া কাজ করা যাবেও না। কারণ ক্যাবলটা বেবিচকের। আর সংস্থাটির ক্যাবল ধরে আবহাওয়া অফিসের লাইন চলতো। তাদের অনুমতির চিঠি পেলে কাজ শুরু হবে।’