চট্টগ্রাম

আরসি-ফুড কার্যালয়ে ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণে মামলার ‘ফাঁদ’

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি-ফুড) কার্যালয়ে আছে ৪৫৭ জন পরিবহন ঠিকাদার। তাদের মেয়াদ শেষ প্রায় ৬ বছর। এরই মধ্যে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্রও আহ্বান করা হয়। তবে তালিকাভুক্ত ঠিকাদার নয়— এমন দুজন নানা অজুহাতে অসাধু ঠিকাদারদের যোগসাজশে পৃথকভাবে আদালতে মামলা ঠুকে স্থগিত করে দিয়েছেন নিয়োগ কার্যক্রম। ফলে মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও বছরের পর বছর ঠিকাদারি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পুরনোরা। অথচ বিভিন্ন সময় পরিবহনকালে চাল-গম চুরি করতে গিয়ে তারা ধরাও পড়েছেন। কিন্তু প্রতিবারই কর্তাদের ‘পকেট ভরিয়ে’ চুরির অভিযোগ থেকে পার পেয়ে গেছেন নির্বিঘ্নে।

তবে, কিছু ব্যবসায়ীর দীর্ঘদিনের দাবি, নতুন ঠিকাদার নিয়োগ না হলেও দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে খাদ্য ঠিকাদারি কাজ চালানো হলে সরকারের সাশ্রয় হত । এতে ‘দুই নম্বরি ফন্দি’ ভেস্তে যেত অসাধু সিন্ডিকেটের। আর যদি পুরনো ঠিকাদাররা কাজে থাকেন, তাহলে খাদ্য পরিবহনে অনিয়ম ও চুরি দিন দিন বাড়তেই থাকবে।

মেয়াদ শেষ ২০১৯ সালে

২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে নিয়োগ পাওয়া ৪৫৭ জন পরিবহন ঠিকাদার দরপত্র ছাড়াই এখনো কাজ করছেন। ২০১৯ সালের জুনে মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু ওই সময় করোনা পরিস্থিতির ইস্যু দেখিয়ে তিন মাস করে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে অন্তত দেড় বছর। পরবর্তীতে করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

অসাধু ঠিকাদারদের একটি সিন্ডিকেট সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগরের বেশ কয়েকটি এলাকায় গন্তব্যে না গিয়ে চাল-গম চুরি করার উদ্দেশ্যে খালাসের সময় ধরা পড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। ধরা পড়ার পরও বিভিন্ন স্থানে তদবির ও অসাধু কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ করে’ চুরির অভিযোগ থেকে পার পেয়ে যায় ওই সিন্ডিকেট।

নিয়োগ স্থগিতে মামলার ‘ফাঁদ’

২০২২ সালের ৬ জুলাইয়ের দিকে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে চট্টগ্রাম আরসি-ফুড। ২০২২ সালের ২৬ জুলাই ‘রক্তপাতের আশঙ্কা’ করে ঢাকার একটি আদালতে মামলা দায়ের করেন এক ব্যক্তি। যিনি মামলাটি করেছিলেন তিনি আরসি-ফুড চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত কোনো পরিবহন ঠিকাদার নন। মামলার পর নতুন ঠিকাদার নিয়োগ কার্যক্রমে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত।

ওই বছর একই ইস্যু তুলে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আরও একটি মামলা দায়ের করেন আরেক ব্যক্তি। তিনিও আরসি-ফুডের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার নন। এই মামলায়ও নতুন ঠিকাদার নিয়োগ কার্যক্রমে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত।

পরবর্তীতে এই মামলার ইস্যু ধরে ৪৫৭ জন পরিবহন ঠিকাদারকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আদেশ জারি করে আরসি-ফুড।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d