আর কখনো এফডিসিতে যাবেন না নায়িকা অঞ্জনা
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক সময়ে ঢাকাই সিনেমার অন্যতম মুখ ছিলেন অঞ্জনা রহমান। নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করা একমাত্র দেশীয় চিত্রনায়িকাও তিনি।
‘দস্যু বনহুর’ দিয়ে শুরু। ১৯৭৬ সালের এই সিনেমার পর টানা কাজ করেন। এ পর্যন্ত তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন।
২০০৮ সালে মুক্তি পায় অঞ্জনার সর্বশেষ সিনেমা ‘ভুল’। তবে সিনেমায় বর্তমানে নিয়মিত না থাকলেও সিনেমা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত মুখ তিনি। জুনিয়র থেকে সিনিয়র সবার সঙ্গেই সদা হাস্যোজ্জ্বল।
এবার সেই অঞ্জনা জানালেন, সিনেমার আতুড়ঘর খ্যাত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) আর কখনোই পা রাখতে চান না তিনি।
সর্বদা নিজের আজকের অবস্থানের পেছনে সিনেমার ভূমিকাকে এগিয়ে রাখতেন অঞ্জনা৷ তাই এই ইন্ডাস্ট্রির লোকদের সব সময় নিজের পরিবার ভাবতেন। সেই পরিবারের সদস্যদের কারণেই মনে কষ্ট পেয়েছেন। আর এ কারণেই অভিমানে এফডিসিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
কষ্টের কারণ হিসেবে জানা গেছে, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। গেল কয়েকটি কমিটিতে ছিলেন অঞ্জনা রহমান। সেই ধারাবাহিকতায় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪–২৬ মেয়াদি নির্বাচনে মাহমুদ কলি ও নিপুণ আক্তারের প্যানেল থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন করেন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মিশা সওদাগর ও ডিপজলের প্যানেল থেকে এই সময়ের তরুণ নায়ক জয় চৌধুরী। তবে নির্বাচনের ফলাফলে জয়ের কাছে হেরে যান গুণী অভিনেত্রী অঞ্জনা। জয় ভোট পান ২৫০ ভোট অন্যদিকে নায়িকা অঞ্জনা পেয়েছেন ১৮৫ ভোট। এমন ফলাফলেই কষ্ট পেয়েছেন অঞ্জনা।
এছাড়া কিছুদিন আগেই চেক ডিসঅনারের জন্য অঞ্জনাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন ডিপজল। একটি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে এমন নোটিশ পাঠানো হয়। যেটাও দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অপমানজনক মনে হয়েছে অঞ্জনার কাছে। এসব কারণে কষ্ট পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন অঞ্জনা। আর তাই কখনও বিএফডিসিতে পা রাখতে চান না গুণী এই অভিনেত্রী।
উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনে বিশাল জয় পেয়েছে মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজলের প্যানেল। ২১ পদের মধ্যে ১৮টিতেই জয় তাদের। অপরদিকে এই নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে মাহমুদ কলি ও নিপুণ আক্তার প্যানেলের।
এবার ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নির্বাচনে ৬ জন স্বতন্ত্রসহ ২টি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্যানেল দুটি হলো মিশা-ডিপজল ও মাহমুদ কলি-নিপুণ।
এবারের নির্বাচনে ভোটার ছিল ৫৭০ জন। ভোট দিয়েছেন ৪৭৫ জন। এ নির্বাচনে কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।