আর নয় প্রতিশ্রুতি, এবার পদক্ষেপ চান ফিলিস্তিনিরা
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে দীর্ঘ সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজাতে তীব্র আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল।
ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় উপত্যকাটিতে নিহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। চরম মানবিক সংকট ও দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছেন ভূখণ্ডটির বাসিন্দারা।
গত ৭ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজার ফিলিস্তিনিরা যে দুর্দশার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন— জাতিসংঘ আদালতের রায়ে তার পরিবর্তন ঘটার তেমন সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন তারা। খবর রয়টার্স।
গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা থেকে প্রাণ বাঁচাতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিদের মতো নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় আশ্রয় নেন উত্তর গাজার বাসিন্দা সালওয়া আল-মাসরি। বর্তমানে শহরের দেইর আল বালাহ এলাকায় একটি অস্থায়ী শিবিরে থাকছেন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা।
শুক্রবার জাতিসংঘভিত্তিক আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বন্ধের আদেশ দিয়ে রায় দেন। এই সময়ে এই রায় সঠিক বলে মনে করেন তিনি এবং তার মত বাস্তুচ্যুতরা।
রয়টার্সকে রায়ের প্রতিক্রিয়া তিনি বলেন, ‘এই রায় একদম সঠিক এবং সময়োপযোগী। তবে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এসব সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন দেখতে চাই, কার্যকর পদক্ষেপ চাই। কারণ, যতই দিন যাচ্ছে, গাজায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছে।’
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত সাত মাসে চারবার বাস্তুচ্যুত শাবান আবদেল রউফ রয়টার্সকে বলেন, ‘ইসরায়েল বিশ্বকে পাত্তা দেয় না। তারা নিজেদের বরাবরই আইনের উর্ধ্বে বলে মনে করে কারণ ইসরায়েলের শাস্তির বিরুদ্ধে মার্কিন প্রশাসন কাজ করছে।’
‘আর দুঃখজনক হলেও সত্য হলো— ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হওয়া থেকে ফিলিস্তিনিদের বাঁচানোর জন্য বিশ্ব এখনও প্রস্তুত নয়।’
গত ডিসেম্বরে জাতিসংঘের আদালতে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বন্ধের আর্জি জানিয়ে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এদিকে গত মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাফায় সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা ঘোষণা দেন। চলতি মে মাস থেকে রাফায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
এদিকে, নেতানিয়াহুর ঘোষণার পর অভিযান বন্ধেও জাতিসংঘের আদালতে আবেদন করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে শুক্রবার এক রায়ে রাফায় অভিযান বন্ধ করার আদেশ দেন জাতিসংঘ আদালত।
তবে আদালতের এই রায় প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা বলেছেন, হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের উদ্ধার করতে রাফায় অভিযান চালানো জরুরি।