জাতীয়

ইউরেনিয়ামের চতুর্থ চালান পৌঁছেছে রূপপুরে

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীর রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েলের (ইউরেনিয়াম) চতুর্থ চালান পৌঁছেছে।

কঠোর নিরাপত্তায় নাটোর-কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক দিয়ে শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো নির্মাণাধীন এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে পৌঁছায়।

ইউরেনিয়ামবাহী গাড়িগুলো ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় ঢুকলে প্রকল্পের দেশি-বিদেশি কর্মীরা স্বাগত জানান।

এদিকে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো আনার সময় মহাসড়কে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তাবলয় ছিল। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভোর থেকে সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত পাবনা-নাটোর-কুষ্টিয়া মহাসড়কে বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে বিকল্প পথ হিসেবে ঈশ্বরদী-নগরবাড়ি সড়কসহ আঞ্চলিক সড়কগুলো খোলা রাখা হয়।

পাকশী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশীষ কুমার স্যানাল বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. শৌকত আকবর বাংলানিউজকে জানান, এর আগে ১২ অক্টোবর রাশিয়া থেকে তৃতীয় চালানের ইউরেনিয়াম বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছায়। প্রাথমিক পর্যায়ে মোট সাতটি চালানে আসা জ্বালানি দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে এক বছর ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।

জানা গেছে, রূপপুরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে জ্বালানি ব্যবহার হবে, তা চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া তিন বছর বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। প্রতিদিন জ্বালানির প্রয়োজন হয় না। একবার জ্বালানি লোডের পর প্রথম তিন বছরের জন্য বছরে একবার করে (এক-তৃতীয়াংশ) এবং পরবর্তী সময়ে দেড় বছর পরপর জ্বালানি পরিবর্তন করতে হবে। ফলে জ্বালানির কারণে দেশের অন্যান্য কেন্দ্র যেভাবে বন্ধ থাকে, এখানে ওই ধরনের কোনো সংকট হবে না।

তার আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাশিয়া থেকে ঢাকায় আসার পর ২৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার করা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান ঢাকা থেকে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছে। ৬ অক্টোবর পৌঁছায় দ্বিতীয় চালান।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মত, ২০২৪ সালের মার্চে প্রথম ইউনিটে ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। পরের বছর ২০২৫ সালের মাঝামাঝি দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দু’টি ইউনিটে মোট ২,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।

বাংলাদেশ সরকার ও রাশান ফেডারেশনের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এটি দেশের প্রথম ও একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d