ইউরো : রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জার্মানিকে কাঁদিয়ে সেমিতে স্পেন
দারুণ পারফরম্যান্সে লিড নেওয়ার পর খেই হারিয়ে ফেলল স্পেন। প্রতিপক্ষের ওপর প্রবল চাপ বাড়ালেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না জার্মানি।
বিদায়ের দুয়ারে গিয়ে গোল করে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে টেনে নিল তারা। সেখানে শেষ সময়ে গোল করে জার্মানদের স্তব্ধ করে দিলেন মিকেল মেরিনো। টানা পঞ্চম জয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালে উঠল স্প্যানিশরা।
স্টুটগার্টে শুক্রবার প্রথম কোয়ার্টার-ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে স্পেন। ম্যাচের ১৫ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে ইয়ামালের বাঁ পায়ের শট বেশ ক্লোজ ছিল। পোস্টের ডানদিক ঘেঁষে চলে যায়। এর দুই মিনিট পর ফ্যাবিয়েন রুইস বক্সের বাইরে থেকে মারেন ওপর দিয়ে।
ম্যাচের ২১ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় জার্মানি। জসুয়া কিমিচের ক্রস থেকে কাই হাভার্টজের বক্সের মধ্য থেকে হেড অবশ্য ফিরিয়ে দেন স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমন।
৩৫ মিনিটে স্পেনের হাভার্টজকে গোল করতে দেননি নুয়্যার। ৩৯ মিনিটে দানি ওলমো আর ৪৫ মিনিটে ইয়ামালের শটও আটকে দেন জার্মান গোলরক্ষক। গোলশূন্য থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আবারো বল দখলে নিয়ে আক্রমণ করতে থাকে স্পেন। ৪৭ মিনিটে আলভারো মোরাতা গোলের সুযোগ পেলেও তার শট রুখে দেন নুয়্যার। ৫১ মিনিটে জার্মান রক্ষণ দূর্গ ভাঙেন পেদ্রির বদলি নামা দানি ওলমো।
লামিন ইয়ামালের ক্রস থেকে ডান পায়ের জোরালো শটে গোল করে দলকে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সী ইয়ামালের এবারের ইউরোতে এটি তৃতীয় এসিস্ট।
৬৪ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা ফুলক্রুগের হেড গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়। মুহুর্মুহু আক্রমণে স্পেন ডিবক্সের ভেতর ঝড় তুলতে থাকে জার্মানি।
৭০ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পায় জার্মানি। আনদ্রিখের দারুণ শট উনাই সিমন রুখে দেন। ৭৭ মিনিটে গোলের অনেক কাছাকাছি চলে গিয়েছিল জার্মানি। ফুলগ্রুগের ডান পায়ের শট গোলবারে লেগে প্রতিহত হলে আর সমতায় ফেরা হয়নি তাদের।
একটা সময় স্পেন ৫৫ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রাখলেও শেষ দিকে জার্মানরা ৫০ শতাংশে তা নিয়ে আসে। ৮১ মিনিটে জামাল মুসিয়ালা ডি বক্সে বল নিয়ে ঢুকলেও তা বাম দিক দিয়ে বাইরে মারেন।
অবশেষে ৮৯ মিনিটে জার্মানিকে কাঙ্ক্ষিত গোল এনে দেন চলতি মৌসুমের বুন্দেসলিগার সেরা ফুটবলার ফ্লোরিয়ান ভিরতজ। ডিবক্সের ভেতর জটলা থেকে ডান পায়ে গোল করে দলকে ১-১ এ সমতায় ফেরান। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ৯১ মিনিটে ফেরান টরেসের হেড সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। ১০১ মিনিটে আনদ্রিখের দারুণ শটও বাইরে চলে যায়।
দুই দল আক্রমণের পাশাপাশি একে অন্যকে মেরেও খেলতে থাকে তারা। ১০৪ নিনিটে ওয়ারজাবালের বাম পায়ের বাকানো শটও খুঁজে পায়নি গোলের নিশানা। ১০৫ মিনিটে আবারো সেই ভিরতজের ডিবক্সের ভেতর নেওয়া বাম পায়ের বাকানো শট গোলবার ঘেষে বাইরে চলে যায়।
অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধেও চলে আক্রমণ ও পালটা আক্রমণ। ১০৬ মিনিটে জামাল মুসিয়ালার শট কুকুরেল্লার হাতে লাগলেও রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেননি। ১০৯ মিনিটে ফুলক্রুগ ডিবক্সের ভেতর দারুণভাবে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কিক নিলেও তা অন টার্গেটে হয়নি।
কিন্তু ১২০ মিনিটে যেন হ্যালির ধুমকেতুর মত জ্বলে উঠলেন মেরিনো। দানি ওলমক্র ক্রস থেকে দারুণ হেডে গোল করে দলকে ২-১ ব্যবধানের অবিস্মরণীয় এক জয় এনে দেন মেরিনো। এই জয়ে সেমিফাইনালে উঠলো স্পেন, অন্যদিকে স্বাগতিক হিসেবে কোয়ার্টার থেকেই বিদায় নিলো জার্মানি।