দেশজুড়ে

ইলিশ মৌসুমে সাগরে ধরা পড়ছে রুই কাতলা মৃগেল

বছরের এসময়ে নগরীর সমুদ্র উপকূলে বসতো ইলিশের হাট। কিন্তু এখনও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা পায়নি এসব জেলেরা। ইলিশ না পেলেও গত কয়েকদিন ধরে জেলেদের জালে আটকা পড়ছে মিঠা পানির রুই, কাতলা ও মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ইলিশ কিনতে গিয়ে এখন হতাশ হয়ে ফিরছেন উপক‚লের বাসিন্দারা। কিনে আনছেন পুকুরে চাষ করা মাছ। সম্প্রতি চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় সৃষ্ট বন্যায় মাছের ঘের, জলাশয় ও পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় মিঠা পানির এসব মাছ সাগরে চলে এসেছে।

নগরীর উপকূলীয় ঘাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সারি সারি নৌকা করে সাগর থেকে মাছ ধরে ফিরছেন জেলেরা। মাছের ঝুড়ি কাঁধে নিয়ে জেলেরা ডাঙায় উঠতে ভিড় করছেন ইলিশের কেনার আশায় সৈকতে আসা ক্রেতারা। কিন্তু তাদের সবাইকে হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে। ঝুড়িতে ইলিশের পরিবর্তে বোঝাই করা আনা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মিঠা পানির মাছ।

স্থানীয় জেলে রবি জলদাস বলেন, ‘সাগরে এখন ইলিশের আকাল পড়েছে। পুরো জালে ৮-১০ কেজি ইলিশও মিলছে না। গত পূর্ণিমা অর্থাৎ ২০ জুলাইয়ের পর থেকে কিছু মাছ জালে ধরা পড়েছে। এখন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে সামান্য। গত ৪/৫দিন ধরে জালে আটকা পড়ছে বেশির ভাগ মিঠা পানির মাছ।’

দক্ষিণ কাট্টলী রানি রাসমিন ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, সাগর থেকে আনা মাছগুলো বিক্রির জন্য সৈকতের পাইকারি বাজারে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে বেশিরভাগ রুই, কাতলা মৃগেল, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মিঠা পানির মাছ। পাইকারি বাজারে এসব মাছ প্রকার ভেদে কেজি প্রতি ১০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

এলাকার জেলে সর্দার খেলন জলদাস বলেন, ‘এখন মিঠা পানির মাছও কিছুটা কমে এসেছে। তবে আজও (শুক্রবার) শুধুমাত্র এই ঘাটে প্রায় দুই টন মিঠা পানির মাছ পাওয়া গেছে। যদিও এদের বেশিরভাগ মৃত।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, বন্যায় চট্টগ্রাম উপকূলের বেশ কয়েকটি উপজেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়ে মিরসরাই। পুরো জেলায় মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধুমাত্র মিরসরাইয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় অর্ধেক। এছাড়াও সীতাকুণ্ড এবং নগর উপক‚লেরও অনেক মৎস্য ঘের ও জলাশয় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। যার ফলে প্রায় ১৬ হাজার টনের বেশি মাছ ভেসে গেছে। এসব মাছ পানির স্রোতের সাথে মিশে সাগরে চলে এসেছে।’

সাধারণত মিঠা পানির মাছ সাগরে চলে আসলে বেঁচে থাকার কথায় নয়। তবে মৎস্য কর্মকর্তার মতে বন্যার সময় এসব পুকুর জলাশয় তলিয়ে যাওয়ার পর এসব মাছ বিভিন্ন খাল ও উন্মুক্ত স্থানে আটকে ছিল। ধীরে ধীরে এগুলো সাগরে নামছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে সাগর উপকূলে পানির লবণাক্ততা অনেক কম। যার কারণে এখন জেলেদের জালে আটকা পড়ছে এসব মাছ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d