অর্থনীতিচট্টগ্রাম

ইস্পাত শিল্পের জন্য শিপ রিসাইক্লিংয়ের বিকল্প নেই

২০২০ সালে করোনা মহামারী, পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও সম্প্রতি দেশে ডলার সংকটের কারণে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে ইস্পাত শিল্পের কারখানাগুলো স্ক্র্যাপ আমদানিতে বড় ধাক্কায় খায়।

অন্যদিকে, দেশে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী ট্যানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মাতারবাড়ি বন্দর, বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল ইত্যাদি উন্নয়ন কাজে রডের বিশাল চাহিদা দেখা দেয়। এই সময় দেশের ইস্পাত শিল্পে বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে দেশের শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ডগুলো। দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে যে পরিমান রডের প্রয়োজন তার জন্য কাঁচামাল হিসেবে জাহাজ ভাঙা শিল্পগুলোর কোন বিকল্পই নেই। কারণ ইস্পাত শিল্পের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কাঁচামালই আসে শিপ রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে।

বর্তমানে দেশের প্রায় পঞ্চাশটি শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ড দক্ষতার সাথে কাজ করছে। যার সুনাম ছড়িয়েছে বহির্বিশ্বে। দক্ষতা ও আন্তরিকতার কারণে টানা পাঁচবার বিশ্বে শিপ রিসাইক্লিংয়ে বাংলাদেশ শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। যার অবদান রয়েছে সরকারেরও। কারণ শিপ রিসাইক্লিং সেক্টরকে আরো আধুনিক করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে সহযোগিতা করেছে।

এছাড়া শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ডগুলোও তাদের ইয়ার্ড ডেভলেপমেন্টে বড় রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কারণ ২০২৫ সালের মধ্যে জুনের মধ্যে অবশ্য সব শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ডকে হংকং কনভেনশনের শর্ত পালন করতে হবে। তাই এই শিল্পেও ব্যাপক উন্নয়ন চলমান রয়েছে।

‘হংকং কনভেনশন’ কার্যকর হলে বাংলাদেশ ওইসিডি দেশগুলো থেকে অনেক কম দামে জাহাজ প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে বাজারে রডের মূল্য কমে আসবে। এ শিল্পের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ট্রিটমেন্ট স্টোরেজ এন্ড ডিসপোজাল ফ্যাসিলিটি (টিএসডিএফ) তৈরি ও পরিচালনার জন্য জাপান থেকে কারিগরি সক্ষমতা এবং সফট লোন প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে। ইয়ার্ডগুলোতে কম দুর্ঘটনা ঘটবে, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে এবং শ্রমিকদের স্বাস্থ্য, সমুদ্রের পানি ও পরিবেশের বিপর্যয় রোধ হবে।

মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d