জাতীয়

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া নিলে সেই পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হবে : রাঙ্গা

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, “এবারের ঈদ যাত্রায় আন্তঃজেলা বা দূরপাল্লার কোনো গণপরিবহন যদি বাড়তি ভাড়া নেয়, সেটার প্রমাণ যদি আমরা পাই, তবে সেই গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। নেওয়া হবে আইনানুগ পদক্ষেপ।”

পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়ক/মহাসড়কের যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন, নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় একথা বলেন তিনি।

মঙ্গলবার হাইওয়ে পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খানের সভাপতিত্বে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় নিজের বক্তব্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, “এবারের ঈদে সম্ভাব্য কোন কোন এলাকায় জট, যানজট বা ব্লক তৈরি হতে পারে সেটা চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা এবার হাইওয়েতে ঈদযাত্রায় ড্রোনের সহায়তা নিচ্ছি। ড্রোনের সহায়তায় চিত্র দেখে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে পারব। হাইওয়ের অনেক রাস্তা চার লেন হচ্ছে। কোথাও কোথাও হয়ে গেছে। এখন রাস্তায় যদি কোনো যানবাহন অকেজো হয়ে পড়ে তাহলে সেটি সরানো সহজ হবে। ক্রুটিপূর্ণ কোনো যানবাহন যাতে ঈদে সড়কে না নামে সেটা নিশ্চিত করতে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।”

তিনি বলেন, “আমরা সবাই ভালোভাবে ঈদযাত্রায় যেতে চাই। ভালোভাবে যাওয়ার সুযোগটা আমাদের তৈরি করতে হবে। ঈদে আমরা সবাই একসঙ্গে যেতে চাই। সেটা না করে আমরা ভাগ ভাগ করে, আগে বা পরেও যেতে পারি৷ তাহলে ৫/৭ বা আট ঘণ্টার মধ্যেই গন্তব্যে যেতে পারব।”

রাঙ্গা বলেন, “ঈদের দুদিন আগেই যেতে হবে ব্যাপারটা সেরকম না। জনসংখ্যার তুলনায় গণপরিবহন আমাদের অনেক কম। হজের সময় সৌদিতে বাস সরকার হায়ার করে৷ আর আমাদের এখানে ঈদে সে ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই আপনি আরও আগে বা ঈদের পরও যেতে পারেন। আমরা আশ্বস্ত করছি ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে।”

সিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, “আমরা লক্ষ্য করি, কিছু লক্করঝক্কর বাস, যেগুলো সারা বছর সিরিয়াল পায় না এগুলো ঈদের সময় রাস্তা নেমে পড়ে। এসব আমরাও ধরতে পারি না পুলিশও বুঝতে পারে না কোত্থেকে এগুলো রাস্তায় আসে। এগুলো রিজার্ভ হিসেবে চলে গার্মেন্টস শ্রমিকরা নিয়ে যায়। যে রাস্তায় আমাদের ছোট বাসও চলে না সেখানে দেখি বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাস ঢুকে পড়েছে। আমরা এখনো মহাসড়ক থেকে নছিমন করিমন ভটভটি সরাতে পারিনি। এটাও একটা বাধা আমাদের।”

ঈদে প্রতিবছরই বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ আসে, প্রমাণও মেলে। কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না। এমন প্রসঙ্গে রাঙ্গা বলেন, “অনেক পরিবহনই ঈদের সময় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেন। যেসব বাস কোম্পানি সুনামের সঙ্গে কাজ করছে তাদের কোনো বাস যদি ভাড়া বেশি নেয় তাহলে আমাদের জানাবেন, আমাকে জানাবেন ব্যবস্থা নেবো। প্রয়োজনে স্পটে উপস্থিত হবো। অভিযোগ পেলেই আমরা সেখানে যাব। কোন কোন জায়গায় কারা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন সেটা আমরা সনাক্ত করব।”

বাড়তি ভাড়া নেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে কী ব্যবস্থা নেবেন জানতে চাইলে রাঙা বলেন, “আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পেলে সেই গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেবো। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।

মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে সড়কের তিনটি লেনই অবৈধ পার্কিং এর দখলে। যার বড় প্রভাব পড়ে সড়ক চলাচলে। সেটা সমাধান না হলে ঈদ যাত্রার বড় অংশ সময় যাবে ঢাকাতেই। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, “রাস্তা লক বা ব্লক করে রাস্তায় দাঁড়ানোর কোনো অধিকার আমাদের নাই। যারা অবৈধভাবে পার্কিং করবেন সড়কে, আর যানচলাচল বিঘ্নিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশ আইনানুগ পদক্ষেপ নিক, আমাদের কোনো সমস্যা নাই।”

মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে তো সড়কই নেই, সড়ককেও টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে রাঙা বলেন, “আমি এখান থেকে বের হয়েই আগে মহাখালী যাব৷ দেখি ওখানে কী সমস্যা। আবারও বলছি, যারাই অবৈধ পার্কিং করবেন, অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো আমরা।

সভায় বিজিএমইএ, বিকেএমইএর চেয়ারম্যান/জেনারেল সেক্রেটারি, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের মহাসচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির চেয়ারম্যান/জেনারেল সেক্রেটারি, ঢাকা বাস-ট্রাক ওনার্স গ্রুপের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক/সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, বাস মালিক সমিতিসহ হাইওয়ে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজন উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d