ধর্ম

উত্তম অভ্যাস ‘জাযাকাল্লাহ’ বলা

প্রতিনিয়ত আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন বিষয় শেখাই। শেখানোর তালিকায় যোগ করা যেতে পারে বিশেষ একটি বাক্য বলার অভ্যাস।

যা শুধু একটি বাক্য নয়, এটা একটি দোয়াও বটে। বাক্যটি হলো- জাযাকাল্লাহ।
কারও থেকে কোনো উপকার পেলে তাকে ‘জাযাকাল্লাহ’ বলা উচিত। অনেকে মনে করেন, কেউ আমার জন্য কষ্ট করলে তখন জাযাকাল্লাহ বলতে হয়।

বিষয়টি এমন নয়। আসলে জাযাকাল্লাহ বলার সম্পর্ক কষ্টের সঙ্গে নয়, উপকারের সঙ্গে। কেউ আমার সামান্য উপকার করলেই আমি তাকে জাযাকাল্লাহ বলবো। উপকারটা ছোট হোক বা বড় হোক।
অধিকন্তু জাযাকাল্লাহর সঙ্গে খাইরান শব্দ যোগ করে ‘জাযাকাল্লাহু খাইরান’ বলা অধিক উত্তম।

কেননা, জাযাকাল্লাহ অর্থ আল্লাহ আপনাকে প্রতিদান দিন। আর খাইরান শব্দের অর্থ উত্তম। ‘জাযাকাল্লাহু খাইরান’ অর্থ আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।

অনেক ইসলামি স্কলারের অভ্যাস হলো, তাকে যদি কেউ শুধু জাযাকাল্লাহ বলেন, তখন তিনি নিজে থেকে খাইরান শব্দ যোগ করে নেন এবং এভাবে বলতে বলেন। কারণ, প্রতিদান ভালো হতে পারে, আবার মন্দও হতে পারে। তাই জাযাকাল্লাহু খাইরান পুরোটা বলা বাঞ্ছনীয়।

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত উসামা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমার প্রতি যদি কেউ কৃতজ্ঞতার আচরণ করে তখন যদি তুমি তাকে জাযাকাল্লাহ খাইরান (আল্লাহ তোমাকে উত্তম বিনিময় দান করুন) বলো, তাহলেই তুমি তার যথাযোগ্য প্রশংসা করলে। -জামে তিরমিজি

অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কেউ যদি তোমাদের সঙ্গে কৃতজ্ঞতার আচরণ করে তাহলে তোমরাও তার সঙ্গে কৃতজ্ঞতার আচরণ করো (তাকে কিছু হাদিয়া দাও)। যদি কিছু দিতে না পারো অন্তত তার জন্য দোয়া করো। যাতে সে বুঝতে পারে যে, তুমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। -সুনানে আবু দাউদ

দেখুন, জাযাকাল্লাহু খায়রান অর্থ আল্লাহ তোমাকে উত্তম বিনিময় দান করুন। এক্ষেত্রে আরবি প্রতিশব্দ শোকরান এর অর্থ তোমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আর ধন্যবাদ বাংলা শব্দ। এটি প্রশংসাবাদ, সাধুবাদ বা কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপক উক্তি। সেই সঙ্গে ইংরেজি থ্যাংক ইউ এর অর্থ তোমাকে ধন্যবাদ, তোমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এ শব্দগুলোর মধ্যে কোনটা আরবি, বাংলা বা ইংরেজি- এদিকে না তাকিয়ে শুধু এগুলোর অর্থের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে- জাযাকাল্লাহু খায়রান বাক্যটি সবচেয়ে সারগর্ভ।

কারণ এতে শুধু কৃতজ্ঞতা প্রকাশ নয়, উপকারীর জন্য কল্যাণের দোয়াও আছে। আর যদি বলা হয়, জাযাকাল্লাহু খায়রান ফিদ দারাইন (আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তোমাকে উত্তম বিনিময় দান করুন) তাহলে তো সোনায় সোহাগা।

কেউ জাযাকাল্লাহ বললে উত্তরে ওয়া ইয়্যাকা বা ওয়া ইয়্যাকুম বলা যায়। অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকেও দান করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d