এক সঙ্গে দুই চাকরি রাউজান কলেজ শিক্ষকের, মামলার নির্দেশ
পাঁচ বছর আগে দ্বৈত চাকরি ও তথ্য গোপন করে সরকারিকরণে নাম অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছিল চট্টগ্রামের রাউজান কলেজের এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম সুজন বিশ্বাস। তিনি পার্বত্য জেলা রাঙামাটির আসাম বস্তি এলাকার বিশ্ব রঞ্জন বিশ্বাসের ছেলে।
জানা যায়, ২০১৯ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পদ সৃজন সংক্রান্ত মূল কাগজপত্র যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে তার নিয়োগ নম্বরপত্রে ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়েছিল। সেসময় বিষয়টি মন্তব্য আকারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছিল।
এর আগে ২০২২ সালের শুরুতে নিয়োগ ও যোগদান সংশ্লিষ্ট এক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অধীনে অধ্যক্ষ কর্তৃক স্থানীয়ভাবে এবং ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর মাউশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক ও সহকারী পরিচালক (কলেজ) কর্তৃক তার বিরুদ্ধে আরও দুইটি অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন হয়। সর্বশেষ, ২০২৩ সালে নিয়োগ ও যোগদানে অনিয়ম, কোচিং বাণিজ্য, মার্কশিট জালিয়াতি, মিথ্যা প্রত্যয়ন এবং দ্বৈত চাকরি করার অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য মাউশিকে নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
তদন্তে ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ নম্বরপত্র সৃজন, তিন বছর পর কলেজে যোগদান এবং এক সাথে দুই কলেজে চাকরি করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়েরের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ২ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশের মাধ্যমে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ফৌজদারি মামলার নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে আজ বুধবার (১৯ জুন) দুপুর পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন রাউজান থানার সেকেন্ড অফিসার অজয় দেবশীল।
সূত্র মতে, কলেজের সদ্য বিদায়ী অধ্যক্ষ মো. নুরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের দুইজন কর্মকর্তা সরেজমিনে এসব অভিযোগ তদন্ত করেন। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুজন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে।
তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানান, হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক সুজন বিশ্বাসের নিয়োগ-যোগদান ২০১৩ সালে দেখানো হলেও মূলত তিনি রাউজান কলেজে যোগদান করেছিলেন ২০১৬ সালে। অন্যদিকে একই সঙ্গে ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত নোয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে কর্মরত থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণ করেন।
মামলা অগ্রগতি বিষয়ে জানার জন্য রাউজান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিম নাওয়াজ চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ না করায় জানা সম্ভব হয়নি।