খেলা

এখনও কি সেমিতে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের?

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সেমিতে যাবার স্বপ্ন নিয়েই এবারের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু, বাস্তবতার কাছে এখনও পরাজিত এই দলটি। মাঠের খেলায় যেমন পারফর্মেন্সের ‘হট্টগোলে’ হচ্ছে তেমনি মাঠের বাইরেও হট্টগোল কম হয়নি। এমনকি এখও চলছে সেসব হট্টগোল।

বাইরের হট্টগোলের আলাপ চারণ না করে মাঠের ভেতরেই থাকা যাক। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ভারত বিশ্বকাপে ৩টি ম্যাচ খেলেছে। এরমধ্যে প্রথম ম্যাচটিতে আফগানিস্তানকে পূর্ব নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী হারিয়েছে। এরপর তাদের পরিকল্পনায় ছিল বড় দলগুলোর বিপক্ষে জেতা। সেই লক্ষ্যে দেশের মাটিতেও তাদের সাথে মহড়া দিয়েছে। সেই ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপের মঞ্চে গোহারা হেরেছে।

এখন ভাবনা আসতেই পারে বাংলাদেশ কি আদৌ বিশ্বকাপের সেমিতে গিয়ে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে? প্রশ্নটা যেমন কঠিন, তার চেয়েও কঠিন এই স্বপ্ন পূরণ করা। আরে মানুষতো তার স্বপ্নের সমান বড়। তাহলে বাংলাদেশ কেন পারবে না?

বাহ্যিকভাবে দেখলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্ন হয়তো ফিঁকে হয়ে আসছে। তবে কাগজে-কলমে বাংলাদেশ এখনো টিকে আছে। শুধু দরকার কিছু অঘটনের। মনে প্রশ্নের উঁকি দিতে পারে কী সেই অঘটন? অঘটন হলো ভারত,অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, দ.আফ্রিকার মতো দলগুলোকে ধরে ধরে হারাতে হবে। পারবেতো বাংলাদেশ? ভাবনা আসতেই পারে পারবে না। মাঠের খেলায় অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়ে যায়। আর এই পরিবর্তনটাই হলো অঘটন। বাংলাদেশ সেই লক্ষ্যেই নিশ্চয় মাঠে নামবে।

বাংলাদেশ কেন পারছে না বিশ্বকাপে ভালো করতে? খুব সিম্পল হিসাব। তাদের পরীক্ষা-নীরিক্ষা। এটার মাশুল দিচ্ছে মাঠের খেলায়। হৃদয়কে দিয়ে খেলানো হয় ৬/৭ নম্বরে। শান্তকে নামানো হয় ৪ নম্বরে। যদিও তারা আরও উপরে খেলে রান পেয়ে অভ্যস্ত। যখন একাধিক অর্ডারে পরিবর্তন আসে তখন যারা দলের ভিত্তি গড়ে দেয় সেই পুরো অর্ডারেই পরিবর্তন আসে। আরেকটি বড় ব্যাপার হলো টপ অর্ডার ধারাবাহিক ভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। এর উপর কোচের খামখেয়ালীপনাও বড় প্রভাব ফেলে দলে। তিনি ওকে নেবেনতো তাকে নেবেন না। বিশ্বকাপের মতো এত বড় মঞ্চে অভিজ্ঞ ও পারফর্ম করাদের নিতে তিনি নারাজ। তার মাশুল দিচ্ছে বাংলাদেশ।

সাকিব-মুশফিকের এটি পঞ্চম বিশ্বকাপ। রিয়াদের চতুর্থ বিশ্বকাপ। ৫বার বিশ্বকাপ খেলা খেলোয়াড় এবারের কোনও দলে নেই। সেদিক থেকে এই দলটি যথেষ্ট অভিজ্ঞ। এই অভিজ্ঞরা তাদের অভিজ্ঞতা দলের তরুণদের মধ্যে বিলিয়ে দেবেন। তারপর তরুণরা আরও উজ্জীবিত হবেন। কিন্তু, তার ছিটেফোঁটা কতটুকু পাওয়া যাচ্ছে মাঠের খেলায় ব্যাটে-বলে?

এরপর অধিনায়কের বিষয়টিও দলে প্রভাব পড়ে। হঠাৎ ওয়ানডে অধিনায়ক পরিবর্তিত হয়ে আসলেন সাকিব। এরপর তিনি অনেকটা ইনজুরি প্রবণ হয়ে পড়লেন। তার মতো পারফর্মার যখন এভাবে খেলতে পারবেন কি পারবেন না এমন জায়গায় থাকে তখন দলের বাকিদের অবস্থা কেমন হয়?

সব কিছুর উর্ধ্বে মাঠের লড়াই। আশা হারাবে না বাংলাদেশ। দ.আফ্রিকাকে গত বিশ্বকাপের আসরেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। ভারত-পাকিস্তানকে হারানোর রেকর্ড আছে দূর্বল বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কা মানসিকভাবে চাঙ্গা নেই। আর নেদারল্যান্ডস হাতের মুঠোতেই আছে। তার মানে অন্তত তিন থেকে চারটি ম্যাচ বাই ম্যাচ যদি বাংলাদেশ জিততে পারে তবে স্বপ্নের সেমিফাইনাল ছোঁয়া অসম্ভব কিছুই নয় টাইগারদের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d