এবার সেই তপুর ‘ফ্রি মুদির বাজার’
চট্টগ্রামে করোনা মহামারির সময় ভ্যানগাড়ি করে ‘ফ্রি সবজি বাজার’ বিতরণ কর্মসূচি সাড়া ফেলেছিল দেশব্যাপী। চট্টগ্রাম থেকে দেখাদেখি এ ভ্রাম্যমাণ ‘ফ্রি সবজি বাজার’ কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়েছিল দেশজুড়ে। তারপর ব্যক্তি উদ্যোগ, রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন ছাড়াও অনেক সামাজিক সংগঠনও নেমে পড়ে এ মানবিক কর্মকাণ্ডে। সেই ‘ফ্রি সবজি বাজারের’ উদ্যোক্তা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তোসাদ্দেক নূর চৌধুরী তপু গত বছরের ন্যায় এবছরও শুরু করেছেন ‘ফ্রি মুদির বাজার’ কর্মসূচি।
রোববার (২৪ মার্চ) সকাল-সন্ধ্যা নগরীর মোহাম্মদপুর এলাকায় এ ‘ফ্রি মুদির বাজার’ বিতরণ শুরু করেছেন তিনি। সপ্তাহে অন্তত একদিন এ কার্যক্রম চালানোর কথা জানিয়েছেন তিনি। একই সাথে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রমজানের শুরু থেকে সাইকেলে ফেরি করে ‘সেহেরিওয়ালা’ স্টিকার সাঁটিয়ে নগরীর বিভিন্ন অলিগলিতে সেহেরি বিতরণ করে চলছেন তিনি।
সরেজমিন দেখা যায়, ‘ফ্রি মুদির বাজার’ বিতরণে ব্যাপক সাড়া মিলেছে খেটে খাওয়া মানুষের। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির দিনে নিন্ম আয়ের মানুষদের মাঝে এমন আয়োজনে দেখা গিয়েছে মানুষের ভিড়। যাদের সিংহভাগই নারী ও শিশু। কাঙ্খিত মুদি পণ্য বিনামূল্যে হাতে পেয়ে এসব অসহায়, ভাসমান মানুষদের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দ ও তৃপ্তির দৃশ্য। তিন শতাধিক মানুষ এখান থেকে জনপ্রতি ৫ কেজি চাল, ৩ কেজি পেঁয়াজ, ২ কেজি আলু, ১ কেজি তেলসহ মোট ১১ কেজি পণ্য নিয়েছেন।
শুধু ‘ফ্রি মুদির বাজারই’ নয়, বছরজুড়ে দেশ-জাতির যেকোনো দুঃসময়ে তপু বের হন মানবতার ঝাণ্ডা হাতে। কখনও এটা, কখনও ওটা নিয়ে পাশে দাঁড়ান আর্তমানবতার সেবায়। বছরজুড়ে বাস্তবায়ন করা তার কিছু উল্লেখযোগ্য মানবিক কর্মসূচি হচ্ছে— সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে ভ্রাম্যমাণ ‘ফ্রি রেস্তোরাঁ’, ঈদ উপলক্ষে পথশিশুদের জন্য ‘ফ্রি শিশু মার্কেট’, রমজান মাস উপলক্ষে সাইকেল করে ‘সেহরিওয়ালা’, ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি রোধে ‘ফ্রি মশারি বিতরণ’, গরিব-অসহায় মেয়েদের যৌতুকবিহীন বিয়ের ব্যবস্থা করতে ‘এক টাকার বিয়ে’, তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সময় ভ্রাম্যমান ফ্রি শীতবস্ত্র ও প্রসাধনী বাজার ‘শীতের ফেরিওয়ালা’, সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য ‘আপনজন সুপার স্টোর; ১ টাকায় মাস্ক কিনলে ১০ কেজি বাজার ফ্রি’, পথশিশু ও সামর্থহীনদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টায় কুরবানি, করোনাকালে ‘ফ্রি চিকিৎসা সেবা’, অসহায়-সমার্থহীনদের জন্য ‘ঈদ উপহার’, করোনাকালীন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ফলমূল নিয়ে ‘ফ্রি পুষ্টি গাড়ি’, করোনার সময় প্রতিদিন ডোর টু ডোর তিনশো মানুষের জন্য রান্না করা খাবার, এবং উন্নয়নের বাংলাদেশ শীর্ষক স্থিরচিত্র প্রদর্শনী।
এ প্রসঙ্গে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রচার সম্পাদক ও ‘ফ্রি মুদির দোকান’ কর্মসূচির উদ্যোক্তা তোসাদ্দেক নূর চৌধুরী তপু একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা গণমানুষের জন্য রাজনীতি করি। কিন্তু বিপদে গণমানুষের পাশে থাকবো না, তা কী করে হয়। তাই দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বগতির দিনে যথাসাধ্য নিম্নআয়ের মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। প্রিয়নেতা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ভাইয়ের নির্দেশনায়-অনুপ্রেরণায় এসব করে যাচ্ছি। তিনি সব সময় এসব কাজে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করেন।’